Friday, April 19, 2024
No menu items!
Homeফাজায়েল ও মাসায়েলনারীদের জন্যইসলামে নারীর বিবাহ বিচ্ছেদের অধিকার

ইসলামে নারীর বিবাহ বিচ্ছেদের অধিকার

নারী-পুরুষের মানবিক প্রয়োজন পূরণে এবং পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সুখময় ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠনের লক্ষ্যে ইসলাম বিবাহবন্ধনের নির্দেশ দিয়েছে। ইসলামের বিধান মতে, বিবাহ সম্পাদনে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই সম্মতি আবশ্যক। কোনো সাবালক পুরুষ কিংবা নারীকে কোনো ব্যক্তি জোরপূর্বক বিবাহ দিতে পারবে না, এমনকি তার জন্মদাতা মা-বাবাও না। জোরপূর্বক বিবাহ দিলে বিবাহ শুদ্ধ হবে না।

কোনো নাবালেগ ছেলে-মেয়েকে তার অভিভাবক জোরপূর্বক বিবাহ দিলেও বালেগ হওয়ার পর তাদের অপছন্দ হলে তারা ওই বিবাহ ভেঙে দিতে পারবে। অতএব, কোনো পুরুষ কোনো নারীকে এবং কোনো নারী কোনো পুরুষকে বিবাহের মাধ্যমে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে তারা সম্পূর্ণ স্বাধীন। ইসলামী শরিয়ত তাদের ওপর কারো জবরদস্তি চাপিয়ে দেয় না। ইসলামে নারীকে জীবনসঙ্গী নির্বাচনের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়কেই সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। যেন কোনো নারীকে কোনো অসৎ পুরুষের খপ্পরে পড়ে অসহায় ও দুর্বিষহ জীবন অতিবাহিত করতে না হয়।

যেহেতু পৃথিবী আবাদ ও সুখময় সমাজ বিনির্মাণেই বিবাহের বিধান, তাই অপ্রয়োজনে এ বন্ধন ছিন্ন করাকে ইসলাম খুবই অপছন্দ করেছে। বিনা প্রয়োজনে তালাক দেওয়া বা তালাক চাওয়া গুনাহর কাজ। তবে স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনে যদি বনিবনা না হয় এবং কোনোভাবেই তাদের মিল হওয়া সম্ভব না হয় অথবা জুলুম-নির্যাতন বা কোনো অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়, তাহলে বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতি রয়েছে। প্রয়োজনে ও যৌক্তিক কারণে স্বামী তালাক দিতে পারে, তদ্রূপ স্ত্রীও তালাক চাইতে পারে। তবে ইসলামী শরিয়ত মতে, তালাকের ক্ষমতা স্বামীর হাতে ন্যস্ত।

তালাকের ক্ষমতা স্বামীর হাতে ন্যস্ত হওয়ার কারণ

এখানে প্রশ্ন জাগে যে ইসলাম ধর্ম মতে, স্বামী নিজ ইচ্ছায় তালাক দিতে পারে; কিন্তু স্ত্রী তার ইচ্ছায় তালাক দিতে পারে না। তাই নারীদের ব্যাপারে বিষয়টিতে সংকীর্ণতা এসেছে। আসলে বিষয়টি সাধারণ ও স্থূল দৃষ্টিতে এমন মনে হলেও প্রকৃত অবস্থা ভিন্ন। আমরা শুরুতেই বলে এসেছি যে কোনো অসহনীয় ও অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি যেন না হয়, তাই শুরু থেকেই নারী-পুরুষ উভয়কেই জীবনসঙ্গী নির্বাচনে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।

তবে বিবাহ হয়ে যাওয়ার পর দুটি জীবন পরস্পর একাকার হয়ে যাওয়ার কারণে একটি নিয়ম ও শৃঙ্খলার খাতিরে তালাকের অধিকার শুধু স্বামীকেই দেওয়া হয়েছে। স্ত্রীর হাতে এ ক্ষমতা অর্পণ না করার যৌক্তিক ও বাস্তবিক অনেক কারণ রয়েছে, যা সামান্য চিন্তা করলে এর যৌক্তিকতা বুঝে আসে।

পৃথিবীর সব ক্ষেত্রেই নিয়মের খাতিরে কোনো বিষয়ের দায়িত্ব একজনের ওপর থাকে, আর অন্যরা তার সহযোগী হয়। এতে কাউকে বঞ্চিত করা উদ্দেশ্য নয় কিংবা তার অবস্থানকে খাটো করে দেখাও উদ্দেশ্য নয়; বরং শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন বিনির্মাণই মূল উদ্দেশ্য। একটি অভিন্ন কর্মক্ষেত্রে দুজন দায়িত্বশীল সমহারে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয় না, নচেৎ তাতে বিঘ্ন সৃষ্টি হবে।

তদ্রূপ স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনের শৃঙ্খলা রক্ষায় একজন প্রধান দায়িত্বশীল হবেন এবং অপরজন তার সহযোগী হবেন। এখন আমাদের দেখতে হবে, কাকে প্রধান দায়িত্বশীল বানাব আর কাকে সহযোগী বানাব? এ ক্ষেত্রে ইসলাম নারীর স্বভাবগত চঞ্চলতা ও অধৈর্যের প্রতি খেয়াল করে এবং পুরুষের দৈহিক সক্ষমতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা বিবেচনা করে পুরুষের ওপর তালাকের ক্ষমতা অর্পণ করেছে। তবে ইসলামে দাম্পত্য জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদিতে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে পরামর্শ করে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ রয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments