Friday, March 29, 2024
No menu items!
Homeফাজায়েল ও মাসায়েলনারীদের জন্যসৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতার ক্ষতি

সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতার ক্ষতি

সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নাফরমানি ও আল্লাহর রাসূল সা. এর অবাধ্যতা:

যারা আল্লাহর নাফরমানি করে এবং আল্লাহর রাসূলের অবাধ্য হয়, তারা তাদের নিজেদের ক্ষতি করল। তারা আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না। রাসূল সা. বলেন,

«كل أمتي يدخلون الجنة إلا من أبى ” , فقالوا : يا رسول الله من يأبى ؟ قال : ” من أطاعني دخل الجنة , ومن عصاني فقد أبى». ]البخاري[.

“আমার সব উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে, তবে যারা অস্বীকার করে তারা ছাড়া। সাহাবী এ কথা শুনে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! যারা অস্বীকার করে তারা কারা? রাসূল বললেন, যে আমার অনুকরণ করল সে জান্নাতে প্রবেশ করল, আর যে আমার নাফরমানি করল, সে অস্বীকার করল”। [বুখারি]

 সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতা মহাবিধ্বংসী কবিরা গুনাহ

হাদিসে বর্ণিত, উমাইমা বিনতে রাকিকাহ রাসূল সা. এর দরবারে আসল, ইসলামের উপর রাসূল সা. এর নিকট বাইয়াত গ্রহণ করতে। তখন রাসূল সা. তাকে জিজ্ঞাসা করে বলল,

«أُبايعك على أن لا تُشركي بالله , ولا تسرقي , ولا تزني , ولا تقتلي وَلَدَكِ , ولا تأتي ببهتان تفترينه بين يديك ورجليك , ولا تَنُوحي ولا تتبرجي تبرج الجاهلية الأولى » [صحيح]

“আমি তোমাকে এ কথার উপর বাইয়াত করাবো, তুমি আল্লাহর সাথে শরিক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, তুমি তোমার সন্তানকে হত্যা করবে না, তুমি কাউকে সরাসরি অপবাদ দেবে না, ‘নিয়া-হা’তথা মৃত ব্যক্তির জন্য কান্না-কাটি করবে না এবং জাহিলিয়্যাতের যুগের নারীদের মত সৌন্দর্য প্রদর্শন করবে না।” এ হাদিসে সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতাকে কবিরা গুনাহের সাথে একত্র করা হয়েছে।

সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতা অভিশাপ ডেকে আনে এবং আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরায়। রাসূল সা. বলেন,

« سيكون في آخر أمتي نساءٌ كاسيات عاريات , على رؤوسهن كأسْنِمَةِ البُخْت , العنوهن , فإنهن ملعونات» [صحيح]

“আমার উম্মতের শেষ যুগে এমন কতক মহিলার আবির্ভাব হবে, তারা কাপড় পরিধান করবে অথচ নগ্ন, তাদের মাথার উপরিভাগ উটের সিনার মত হবে। তোমরা তাদের অভিশাপ কর, কারণ, তারা অভিশপ্ত”। [হাদিসটি বিশুদ্ধ]

সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতা  জাহান্নামীদের চরিত্র

রাসূল সা. বলেন,

«صنفان من أهل النارلم أَرَهُمَا : قوم معهم سِياطٌ كأذناب البقر يضربون بها الناس , ونساء كاسيات عاريات , مُمِيلاتٌ مائلات , رؤوسهن كأسنمة البُخْتِ المائلة , لا يدخلن الجنة , ولا يجدن ريحها , وإن ريحها ليوجد من مسيرة كذا وكذا»   .[ مسلم ]

“দুই শ্রেণীর লোক জাহান্নামী হবে, যাদের আমি আমার যুগে দেখতে পাব না। এক শ্রেণীর লোক, তারা এমন এক সম্প্রদায়, তাদের সাথে থাকবে গরুর লেজের মত এক ধরনের লাঠি যদ্বারা তারা মানুষকে পিটাবে। অপর শ্রেণী হল, কাপড় পরিহিতা নারী, অথচ নগ্ন, তারা পুরুষদেরকে আকৃষ্টকারী ও নিজেরা তাদের প্রতি আকৃষ্ট। তাদের মাথা হবে উটের চোটের মত বাঁকা। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এমনকি জান্নাতের সু-ঘ্রাণও তারা পাবে না। অথচ জান্নাতের সু-ঘ্রাণ অনেক অনেক দূর থেকে পাওয়া যাবে”।  [সহীহ মুসলিম]

সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতা  কিয়ামতের দিন ঘাঢ় অন্ধকার:

রাসূল সা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

« مَثَلُ الرافلةِ في الزينة في غير ِ أهلِها , كمثل ظُلْمَةٍ يومَ القيامة , لا نورَ لها »   [ضعيف]

“অপর পুরুষকে সৌন্দর্য প্রদর্শন করা নারীর উদাহরণ হল কিয়ামতের দিন গভীর অন্ধকারের মত। যার কোন নুর থাকবে না।” [হাদিসটি দুর্বল]

অর্থাৎ, যে মহিলা হাঁটার সময় সৌন্দর্য প্রকাশ করে হেলে দুলে হাঁটে সে কিয়ামতের দিন, ঘোর কালো অন্ধ হয়ে উপস্থিত হবে। তার দেহ হবে আগুনের কালো কয়লার মত। হাদিসটি যদিও দুর্বল, কিন্তু হাদিসের অর্থ শুদ্ধ। কারণ, আল্লাহর নাফরমানিতে মজা উপভোগ করা আযাব, আরাম পাওয়া কষ্ট। আর আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করা এর সম্পূর্ণ বিপরীত। আল্লাহর ইবাদতে কষ্ট পাওয়া, মজা ও শান্তি…ইত্যাদি। কারণ, হাদিসে বর্ণিত আছে, একজন রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর দরবারে মিশকের চেয়ে বেশি সুঘ্রাণ হবে। অনুরূপভাবে শহীদের রক্ত সম্পর্কে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর নিকট মিশকের চেয়ে অধিক সু-গন্ধ।

সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতা  ‘মুনাফেকি’

রাসূল সা. বলেন,

«خير نسائكم الودود , الولود , المواتية , المواسية , إذا اتقين الله , وشر نسائكم المتبرجات المتخيِّلات , وهن المنافقات , لا يدخلن الجنةَ منهن إلا مثلُ الغراب الأعصم »  [صحيح]

তোমাদের মধ্যে উত্তম নারী হল, যারা অধিক মহব্বতকারী, অধিক সন্তান প্রসবকারী, ..যখন তারা আল্লাহকে ভয় করে। আর তোমাদের মধ্যে খারাপ মহিলা হল, যারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শনকারী অহংকারী। মনে রাখবে এ ধরনের মহিলারা মুনাফেক তারা কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করবে না। একমাত্র লাল বর্ণের ঠোঁট বিশিষ্ট কাকের মত। [হাদিসটি সহীহ]

বধির কাক হল, যার পা ও ঠোঁট লাল। এ ধরনের কাক একেবারেই দূর্লভ বা পাওয়া যায় না বললেই চলে। এখানে এ কথা বলার উদ্দেশ্য হল, নারীদের বেহেস্তে প্রবেশের সংখ্যা খুবই কম হবে তার প্রতি ইঙ্গিত করা। 

সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতা আল্লাহর মাঝে ও বান্দার মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি করে ও নারীদের জন্য অপমান:

রাসূল সা. বলেন,

«أَيُّما امرأةٍ وضعت ثيابها في غير بيت زوجها , فقد هتكت سِتْرَ ما بينها وبين الله عز وجل »  

কোন নারী যদি তার স্বামীর ঘরের বাহিরে স্বীয় কাপড় খুলে ফেলে, তাহলে সে তারা মাঝে আল্লাহর মাঝে যে বন্ধন ছিল তা ছিঁড়ে ফেলল। [হাদিসটি সহীহ]

সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতা অশ্লীলতা

অবশ্যই নারীরা হল, সতর। আর সতর খোলা অশ্লীলতা ও নোংরামি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,

 ﴿ وَإِذَا فَعَلُواْ فَٰحِشَةٗ قَالُواْ وَجَدۡنَا عَلَيۡهَآ ءَابَآءَنَا وَٱللَّهُ أَمَرَنَا بِهَاۗ قُلۡ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَأۡمُرُ بِٱلۡفَحۡشَآءِۖ أَتَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ مَا لَا تَعۡلَمُونَ ٢٨﴾] سورة الأعراف[28 :  

“আর যখন তারা কোন অশ্লীল কাজ করে তখন বলে, ‘আমরা এতে আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছি এবং আল্লাহ আমাদেরকে এর নির্দেশ দিয়েছেন’। বল, ‘নিশ্চয় আল্লাহ অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেন না। তোমরা কি আল্লাহর ব্যাপারে এমন কিছু বলছ, যা তোমরা জান না”?

শয়তান মানুষকে এ ধরনের অশ্লীল বিষয়ে নির্দেশ দেয় এবং তাদের অন্যায়ের প্রতি ধাবিত করে। পর্দাহীন নারীরা মূলত: আল্লাহ আদেশ নয়, শয়তানের আদেশেরই আনুগত্য করে। শয়তান মানুষকে অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেয় এবং মিথ্যা আশ্বাস দেয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,

﴿ ٱلشَّيۡطَٰنُ يَعِدُكُمُ ٱلۡفَقۡرَ وَيَأۡمُرُكُم بِٱلۡفَحۡشَآءِۖ ﴾] سورة البقرة .[

“শয়তান তোমাদেরকে দারিদ্রের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং অশ্লীল কাজের আদেশ করে। আর আল্লাহ তোমাদেরকে তার পক্ষ থেকে ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’’

যে নারীরা সৌন্দর্য প্রদর্শন করে ঘুরে বেড়ায়, তারা অত্যন্ত খারাপ ও ক্ষতিকর নারী। তারা ইসলামী সমাজে অশ্লীল ও অন্যায় ছড়ায় এবং বেহায়াপনার দ্বার উন্মুক্ত করে। আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন,

﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ يُحِبُّونَ أَن تَشِيعَ ٱلۡفَٰحِشَةُ فِي ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٞ فِي ٱلدُّنۡيَا وَٱلۡأٓخِرَةِۚ وَٱللَّهُ يَعۡلَمُ وَأَنتُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ ١٩﴾ ]سورة النــور [19 :

“নিশ্চয় যারা এটা পছন্দ করে যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ুক, তাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না”।

সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতা শয়তানের আদর্শ:

অভিশপ্ত ইবলিসের সাথে সংঘটিত আদম আ. ও হাওয়া আ. এর ঘটনা দ্বারা আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারি আল্লাহর দুশমন ইবলিস বনী আদমের ইজ্জত ও সম্ভ্রম হনন করা, তাদের সম্মান হানি করা, তাদের হেয়পতিপন্ন ও দুর্নাম ছড়ানোর প্রতি কতটুকু লালায়িত। এমনকি ইবলিসের লক্ষ্যই হল, বনী আদমকে অপমান, অপদস্থ ও অসম্মান করা। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, 

﴿يَٰبَنِيٓ ءَادَمَ لَا يَفۡتِنَنَّكُمُ ٱلشَّيۡطَٰنُ كَمَآ أَخۡرَجَ أَبَوَيۡكُم مِّنَ ٱلۡجَنَّةِ يَنزِعُ عَنۡهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوۡءَٰتِهِمَآۚ﴾ ]سورة الأعراف [27 :

হে বনী আদম, শয়তান যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত না করে, যেভাবে সে তোমাদের পিতা-মাতাকে জান্নাত থেকে বের করেছিল; সে তাদের পোশাক টেনে নিচ্ছিল, যাতে সে তাদেরকে তাদের লজ্জা-স্থান দেখাতে পারে।

মোট কথা, ইবলিস বেহায়াপনা ও উলঙ্গপনার দাওয়াতের গুরু। শয়তানই নারী স্বাধীনতার শ্লোগান তুলে নারীদেরকে ঘর থেকে বের করার দায়িত্বশীল। যে সব লোক আল্লাহর নাফরমানি করে, শয়তান এ ধরনের লোকদের ইমাম। বিশেষ করে ঐ সব মহিলা যারা তাদের নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে মুসলিমদের কষ্ট দেয় এবং যুবকদের বিপদে ফেলে, শয়তান তাদের বড় ইমাম। শয়তান বনী আদমের চির শত্রু। পৃথিবীর শুরু থেকেই শয়তান মানুষকে বিপদে ফেলে আসছে। আর নারীরা হল, শয়তানের জাল। শয়তান নারীদের মাধ্যমে ব্যক্তি ও সমাজকে কলুষিত করে।

রাসূল সা. বলেন,

« ما تركتُ بعدي فتنةً هي أَضَرُّ على الرجال من النساء  »    . [ متفق عليه ] .

আমি আমার পর পুরুষদের জন্য নারীদের ফিতনার চেয়ে বড় ক্ষতিকর কোন ফেতনা রেখে যাইনি। [বুখারি ও মুসলিম]

সৌন্দর্য প্রদর্শন করা ইয়াহুদীদের আদর্শ

নারীর ফিতনা দ্বারা কোন জাতিকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে ইয়াহুদীদের ষড়যন্ত্র ও কৌশল সফলতার দাবিদার। অতীতে উলঙ্গ নারীরাই হল, তাদের বিভিন্ন সংস্থা ও কার্যক্রমের বড় হাতিয়ার। ইয়াহুদীরা এ বিষয়ে প্রাচীন ও অভিজ্ঞ। এ কারণেই রাসূল সা. বলেন,

« فاتقوا الدنيا , واتقوا النساء , فإن أول فتنةِ بني إسرائيل كانت في النساء »     [مسلم]

“তোমরা দুনিয়াকে ভয় কর এবং নারীকে ভয় কর, কারণ, বনী ইসরাইলের প্রথম ফিতনা ছিল নারীর ফিতনা”। [সহীহ মুসলিম]

তাদের কিতাবসমূহে বর্ণিত আছে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ছিহয়ুন গোত্রের মেয়েদের সৌন্দর্য প্রদর্শনের কারণে শাস্তি দেয়। সিফরে আশিয়া কিতাবের তৃতীয় সংস্করণে উল্লেখ করা হয়েছে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ছিহয়ুন গোত্রের মেয়েদের সৌন্দর্য প্রদর্শনের কারণে শাস্তি দেন। অর্থাৎ তাদের থেকে তাদের বিভিন্ন সৌন্দর্যকে ছিনিয়ে নেয়।

রাসূল সা. উম্মতকে কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করতে এবং তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে নিষেধ করেন। বিশেষ করে নারীর ক্ষেত্রে তিনি উম্মতে মুসলিমাহকে অধিক সতর্ক করেন। কিন্তু তারপর দু:খের সাথে বলতে হয়, বর্তমানে অধিকাংশ মুসলিম নারী ও পুরুষ রাসূল সা. এর সতর্ক করনের বিরোধিতা করেন। রাসূল সা. উম্মতকে যে ভবিষ্যৎ বাণী দিয়ে গেছেন, তার প্রতিফলনই আমরা লক্ষ্য করছি। রাসূল সা. বলেন, 

«لتتبعن سَنَنَ مَن كان قبلكم شبرًا بشبر , وذراعًا بذراع , حتى لو دخلوا جُحْرَ ضَبٍّ لتبعتموهم»   قيل: اليهود والنصارى؟ قال: « فمن؟»  . [متفق عليه]

“তোমরা তোমাদের পূর্বে যারা অতিবাহিত হয়েছে, তাদের হুবহু অনুকরণ করবে; কড়া ইঞ্চি পর্যন্ত অনুকরণ করবে। এমনকি যদি তারা গুই সাপের গর্তে প্রবেশ করে, তোমরাও তাদের অনুকরণ করে গুই সাপের গর্তে প্রবেশ করবে। সাহাবীরা জিজ্ঞাসা করল, তারা কি ইয়াহুদী ও খৃস্টান? রাসূল সা. উত্তরে বললেন, তারা ছাড়া আর কারা”? [বুখারি ও মুসলিম]

যারা ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদের অনুকরণ করে এবং আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের নাফরমানি করে, তাদের সাথে ঐ সব অভিশপ্ত ইয়াহুদীদের সাথে কোন পার্থক্য নাই; যারা এ বলে আল্লাহর আদেশের বিরোধিতা করে, [سمعنا وعصينا] ‘আমরা শুনলাম ও নাফরমানি করলাম’। এরা ঐ সব নারীদের থেকে কত দূরে যারা আল্লাহর নির্দেশ শোনার পর বলে, [سمعنا وعصينا] ‘আমরা শুনলাম এবং অনুকরণ করলাম’।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআনে কারীমে এরশাদ করে বলেন,

﴿وَمَن يُشَاقِقِ ٱلرَّسُولَ مِنۢ بَعۡدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ ٱلۡهُدَىٰ وَيَتَّبِعۡ غَيۡرَ سَبِيلِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ نُوَلِّهِۦ مَا تَوَلَّىٰ وَنُصۡلِهِۦ جَهَنَّمَۖ وَسَآءَتۡ مَصِيرًا ١١٥﴾   ]سورة النساء[115 :

“আর যে রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে তার জন্য হিদায়াত প্রকাশ পাওয়ার পর এবং মুমিনদের পথের বিপরীত পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে ফেরাব যেদিকে সে ফিরে এবং তাকে প্রবেশ করাব জাহান্নামে। আর আবাস হিসেবে তা খুবই মন্দ”।

হেদায়েতের পথ স্পষ্ট হওয়ার পরও যদি কোন লোক গোমরাহির পথ অবলম্বন করে, এবং মুমিনদের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধাচরণ করে, তাদের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কঠিন আযাব রেখেছেন। আখিরাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের কঠিন শাস্তি দেবেন। আর আখিরাতের শাস্তি কত কঠিন হবে তা বর্ণনা দিয়ে বোঝানো যাবে না।

পর্দাহীনতা ও সৌন্দর্য প্রদর্শন নিকৃষ্ট জাহিলিয়্যাত[4]

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআনে করিমে এরশাদ করে বলেন,

﴿وَقَرۡنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجۡنَ تَبَرُّجَ ٱلۡجَٰهِلِيَّةِ ٱلۡأُولَىٰۖ﴾ [سورة الأحزاب:33 ]

“তোমরা তোমাদের ঘরে অবস্থান কর। এবং প্রাক-জাহেলী যুগের মত সৌন্দর্য প্রদর্শন করো না”।

রাসূল সা. জাহিলিয়াতের দাবিকে অপবিত্র ও দুর্গন্ধ বলে অবহিত করেন এবং আমাদেরকে তা প্রত্যাখ্যান করার নির্দেশ দেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গুণ বর্ণনা করতে গিয়ে তাওরাতে বলা হয়, তিনি তাদের জন্য পবিত্র বস্তুকে হালাল করেন এবং অপবিত্র বস্তুকে হারাম করেন।  

﴿ وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡخَبَٰٓئِثَ ﴾  [سورة الأعراف:157 ]

“এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে আর অপবিত্র বস্তু হারাম করে”।

জাহিলিয়্যাতের কু-সংস্কার ও নারীদের সৌন্দর্য প্রদর্শন উভয়টি একটি অপরটির পরিপূরক। এ দুটিই অপবিত্র ও দুর্গন্ধময়। আল্লাহর রাসূল সা. আমাদের জন্য এ সবকে হারাম করেছেন। রাসূল সা. বলেন,

«كل شيء من أمر الجاهلية موضوع تحت قَدَمَيَّ »  [ متفق عليه ]

“জাহিলিয়্যাতের যুগের প্রতিটি বস্তু আমার পায়ের নিচে নিক্ষেপ করা হল”।

এ বিষয়ে একটি কথা মনে রাখতে হবে। জাহিলিয়্যাতের যুগের সুদ, জাহিলিয়্যাতের যুগের দাবি, জাহিলিয়্যাতের যুগের বিধান ও জাহিলিয়্যাতের যুগের উলঙ্গ হওয়া ইত্যাদি সব কিছুর বিধান এক ও অভিন্ন এবং এ গুলো সবই সমান।

সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতা অধঃপতন ও পশ্চাদপরণ

উলঙ্গপনা ও বেহায়াপনা চতুষ্পদ জন্তুর স্বভাব। যখন মানুষের মধ্যে এ ধরনের স্বভাব পাওয়া যাবে, তখন মানুষের পতন অবশ্যম্ভাবী ও অবধারিত। মানুষকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যে সম্মান ও মান-মর্যাদা দিয়েছে, সে তা থেকে নিচে নেমে আসবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে সে সব নেয়ামতরাজি দান করেছে, তা থেকে সে নীচে নেমে আসবে। যারা উলঙ্গপনা, ঘরের বাহিরে যাওয়া ও নারী পুরুষের অবাধ মেলা-মেশাকে সৌন্দর্য বা নারীর অধিকার বলে দাবি করে, বাস্তবে তারা মানবতার দুশমন। তারা মানুষকে মনুষ্যত্ব থেকে বের করে পশুত্বের প্রতি ধাবিত করছে। তারা যদিও নিজেদের সভ্য বলে দাবি করছে, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তারা অসভ্য ও অমানুষ। মানবতার উন্নতির সম্পর্কই হল, আত্ম-সম্ভ্রম হেফাজত করা ও তার দৈহিক সৌন্দর্যকে রক্ষা করার সাথে। মানুষ যখন তার আবরণ ফেলে দিয়ে নিজেকে উলঙ্গ করে ফেলে তখন তার অধঃপতন নিশ্চিত হয়। মানবতার উন্নতি ও অগ্রগতি ব্যাহত হয়। নারীরা যখন পর্দার আড়ালে থাকে তখন তাদের মধ্যে আত্ম-সম্মান ও আত্ম-মর্যাদা বোধ অবশিষ্ট থাকে। ফলে তার মধ্যে একটি রূহানী বা আধ্যাত্মিক শক্তি থাকে যা তাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আর নারীরা যখন দড়ি ছেড়া হয়ে যায়, আবরণ মুক্ত হয়, তখন তার মধ্যে তার প্রবৃত্তি শক্তিশালী হয়, যা তাকে সৌন্দর্য প্রদর্শন ও অবাধ মেলা-মেশার প্রতি আকৃষ্ট করে। সুতরাং, একজন মানুষের সামনে দুটি পথ খোলা থাকে। যখন সে দ্বিতীয়টির উপর সন্তুষ্ট থাকে তখন তাকে অবশ্যই প্রথমটিকে কুরবান দিতে হবে। আর তখন তার অন্তরে আত্ম-মর্যাদাবোধ বলতে কোন কিছু থাকবে না। তখন সে অপরিচিত নারীদের সাথে মেলা-মেশা সহ যাবতীয় সব ধরনের অপকর্মই করতে থাকবে। আর এ ধরনের মেলা-মেশার ফলে মানব প্রকৃতি ধ্বংসের মুখোমুখি হবে। লজ্জাহীনতা বৃদ্ধি পাবে, আত্ম-মর্যাদা ও সম্মানবোধ আর বাকী থাকবে না। মানুষের মধ্যে অনুভূতি থাকবে না এবং তার জ্ঞান-বুদ্ধির অপমৃত্যু ঘটবে।

সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতার ক্ষতি ব্যাপক

যখন কোন ব্যক্তি কুরআন ও হাদিসের প্রমাণাদি ও ইসলামের ইতিহাসের প্রতি লক্ষ্য করবে, তখন সে দ্বীন ও দুনিয়ার উপর পর্দাহীনতা ও সৌন্দর্য প্রদর্শনের ক্ষতি ও প্রভাব কি তা দেখতে পাবে। বিশেষ করে বর্তমানে নারী-পুরুষের অবাধ মেলা-মেশার কু-প্রভাব যখন তার সাথে যোগ করা হয়, তখন তার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে আমরা আরও বেশি উপলব্ধি করতে পারব। সমাজে পর্দাহীনতার কারণে অনেক কিছুই আমরা দেখতে পাই।

সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতার ভয়াবহ পরিণতিসমূহ

নারীরা তাদের প্রতি পুরুষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার লক্ষ্যে নিষিদ্ধ সাজ-সজ্জা গ্রহণের ক্ষেত্রে পরস্পর প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে। তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শনের জন্য নিত্য নতুন পন্থা অবলম্বন করে। এর ফলে তারা একদিকে তাদের চরিত্রকে কলঙ্কিত করছে, অনুরূপভাবে তারা তাদের অনেক পয়সাও এ পথে ব্যয় করে। পরিণতিতে নারীরা বর্তমান সমাজে নিকৃষ্ট ও পঁচা-গন্ধ পণ্যে পরিণত হয়েছে আবার নিজেদের ঠিকানা জাহান্নামের অতলে নির্ধারণ করছে।

এক. সৌন্দর্য প্রদর্শনের ফলে পুরুষদের চরিত্র ধ্বংস হয়। বিশেষ করে যুব সমাজ ও প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেরা সৌন্দর্য প্রদর্শনকারী নারীদের কারণে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে উপনীত হয় এবং তাদের বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কাজ ও অপরাধের দিকে ঠেলে দেয়া হয়।

দুই. পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস হয় এবং পরিবারের সদস্যদের মাঝে অনৈক্য ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় এবং বিবাহ বিচ্ছেদ অহরহ ঘটতে থাকে এই পর্দাহীনতার দ্বারা। 

তিন. সামাজিক ব্যাধির সাথে সাথে সমাজে বিভিন্ন ধরনের মহামারি ও রোগ ব্যাধি দেখা দেয়। রাসূল সা. বলেন,   

  «لم تظهر الفاحشة في قومٍ قَطُّ حتى يُعْلِنوا بها إلا فشا فيهم الطاعونُ والأوجاعُ التي لم تكن في أسلافهم الذين مَضَوْا »     [صحيح]

“কোন কাওমের মধ্যে কোন অশ্লীল কর্ম ও ব্যভিচার দেখা দেয়ার পর তারা যখন তা প্রচার করত, তখন তাদের মধ্যে এমন মহামারি ও দুর্ভিক্ষ দেখা দিত, যা তাদের পূর্বে যারা অতিবাহিত হয়েছে, তাদের মধ্যে দেখা যায়নি”।

পাঁচ. চোখের ব্যভিচার ব্যাপক হারে সংঘটিত হতে থাকবে এবং চোখের হেফাজত করা যার জন্য যাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা কঠিন হয়ে যাবে। রাসূল সা. বলেন,

«العينان زناهما النظر »

“চোখ দুটির ব্যভিচার হল, দৃষ্টি”। [মুসলিম]

সাত. আসমানি মুসিবতসমূহ নাযিল হওয়ার উপযুক্ত হবে। এমন এমন বিপদের সম্মুখীন হতে হবে, যেগুলো ভূমিকম্প ও আণবিক বিস্ফোরণ হতেও মারাত্মক। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআন করীমে এরশাদ করে বলেন,

﴿ وَإِذَآ أَرَدۡنَآ     

أَن نُّهۡلِكَ قَرۡيَةً أَمَرۡنَا مُتۡرَفِيهَا فَفَسَقُواْ فِيهَا فَحَقَّ عَلَيۡهَا ٱلۡقَوۡلُ فَدَمَّرۡنَٰهَا تَدۡمِيرٗا ١٦ ﴾] سورة الإسراء[ ১৬ :

“আর যখন আমি কোন জনপদ ধ্বংস করার ইচ্ছা করি, তখন তার সম্পদশালীদেরকে (সৎকাজের) আদেশ করি। অতঃপর তারা তাতে সীমালঙ্ঘন করে। তখন তাদের উপর নির্দেশটি সাব্যস্ত হয়ে যায় এবং আমি তা সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করি।” রাসূল সা. এরশাদ করেন,

« إن الناس إذا رأوا المنكر , فلم يُغَيِّروه أوشك أن يَعُمَّهم الله بعذاب ».  [صحيح]

“মানুষ যখন অন্যায়কে দেখে এবং তা পরিবর্তন করে না, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের অচিরেই আযাব দ্বারা ঢেকে ফেলবে”।

হে প্রিয় মুসলিম মা ও বোন! তুমিও একটু ভাবো…

এবারে তোমরা রাসূল সা. এর বাণীর প্রতি একটু চিন্তা করে দেখ, যাতে তিনি বলেন,

« نَحِّ الأذى عن طريق المسلمين »؟ .   [صحيح]

অর্থ, মুসলিমদের চলাচলের রাস্তা হতে তোমরা কষ্টদায়ক বস্তু সরাও।

রাস্তা হতে কষ্টদায়ক বস্তু সরানো যার প্রতি রাসূল সা. আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, তা যদি ঈমানের অন্যতম শাখা হয়ে থাকে, তাহলে তোমাদের বুঝতে হবে, রাস্তায় কষ্টদায়ক বস্তু কাঁটা, পাথর, গোবর ইত্যাদি যা মানুষকে দৈহিক কষ্ট দেয় তা মারাত্মক নাকি যা মানুষের আত্মাকে ধ্বংস করে দেয়, জ্ঞান-বুদ্ধি নষ্ট করে এবং ঈমানদারদের নৈতিক পতন নিশ্চিত করে তা বেশি মারাত্মক?

মনে রাখবে একজন যুবকও যদি তোমার কারণে এমন ফিতনায় পড়ল, যা তাকে আল্লাহর স্মরণ ও ভয় হতে বিরত রাখল বা সঠিক পথ হতে তাকে ফিরিয়ে রাখল, অথচ ইচ্ছা করলে তুমি তাকে নিরাপত্তা দিতে পারতে, কিন্তু তা তুমি করলে না, তাহলে তোমাকে অবশ্যই আল্লাহর পক্ষ হতে ভয়াবহ আযাব গ্রাস করবে এবং তুমি কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

হে মুসলিম নারী! তোমরা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইবাদত বন্দেগী ও আনুগত্যর প্রতি অগ্রসর হও। মানুষের গোলামী করা ও তাদের আনুগত্য হতে বেঁচে থাক। কারণ, কিয়ামতের দিন আল্লাহর হিসাব অনেক কঠিন ও ভয়াবহ। কে কী বলল, তা তোমার বিবেচ্য নয়, মানুষকে খুশি করা ও তাদের পদলেহন হতে বিরত থাক। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি লাভের জন্য কাজ করা, তোমার জন্য অধিকতর কল্যাণকর ও নিরাপদ। আর যারা এই পার্থিব জীবনে তোমার এই সৎপথে চলা বা খোদাভীরুতা নিয়ে খেল তামাশা বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে তাদের কঠিন পরিণতি দেখবার জন্য এইতো খানিকটা সময় ধের্য্য ধরো, কালই হয়ত দেখবে পাবে তাদের কুকর্মের পরিণতি। তখন বুঝবে প্রকৃতই কে দুনিয়ার বুকে ছিলো লাভবান আর কে ক্ষতিগ্রস্ত! বস্তুত বড়ই ক্ষতিগ্রস্ত!!

রাসূল সা. বলেন,  

 « من التمس رضا الله بِسَخَطِ الناسِ , كفاه الله مؤنة الناس , ومن التمس رضا الناسِ بِسَخَطِ الله , وَكَلَه الله إلى الناس ». [صحيح]

“যে ব্যক্তি মানুষকে নারাজ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষের থেকে তাকে ফিরিয়ে নেবে এবং আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট হবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে নারাজ করে মানুষের সন্তুষ্টি কামনা করে আল্লাহ তা’আলা তাকে মানুষের নিকট সোপর্দ করবে”। [হাদিসটি সহীহ]

একজন বান্দার উপর ওয়াজিব হল, একমাত্র আল্লাহকে ভয় করা এবং আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলা। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,

﴿ فَلَا تَخۡشَوُاْ ٱلنَّاسَ وَٱخۡشَوۡنِ ﴾]سورة المائدة [৪৪:

“তোমরা মানুষকে ভয় করো না আমাকে ভয় কর”। [সূরা আল-মায়েদা: ৪৪] ৎ

আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন,

﴿ وَإِيَّٰيَ فَٱرۡهَبُونِ ﴾ ]سورة البقرة [৪০:

“তোমরা আমাকেই ভয় কর”। [ সূরা আল-বাকারাহ:৪০]

আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন,

﴿ هُوَ أَهۡلُ ٱلتَّقۡوَىٰ وَأَهۡلُ ٱلۡمَغۡفِرَةِ ٥٦ ﴾]  سورة المدثر[৫৬ :

“তিনিই ভয়ের যোগ্য এবং ক্ষমার অধিকারী”। [সূরা আল-মুদ্দাচ্ছির: ৫৬]

মাখলুকের সন্তুষ্টি অর্জন করার কোন প্রয়োজন নাই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষের সন্তুষ্টি লাভের জন্য নির্দেশ দেননি এবং এটি কোন জরুরি বিষয় নয়। ইমাম শাফেয়ী রহ. বলেন, “মানুষের সন্তুষ্টি লাভ এমন একটি পরিণতি যা লাভ করা কখনোই সম্ভব নয়, সুতরাং এর জন্য তোমার কষ্ট করার কোনো প্রয়োজন নেই। তুমি এমন কর্ম অবলম্বন কর, যা তোমাকে সংশোধন করবে। আর অন্য সব কিছুকে তুমি ছাড়ো”।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুত্তাকীদের উপায় বের করে দেবেন। যা মানুষের জন্য সংকীর্ণ ও সংকুচিত। আর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুত্তাকীদেরকে তাদের ধারণার বাহিরে রিজিক দান করবেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,

﴿وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مَخۡرَجٗا ٢ وَيَرۡزُقۡهُ مِنۡ حَيۡثُ لَا يَحۡتَسِبُۚ وَمَن يَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِ فَهُوَ حَسۡبُهُۥ ﴾ ]سورة الطلاق: [৩

“যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরি করে দেন। এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিযক দিবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াককুল করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট”।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments