রমযানে নারীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ইবাদতের এই বসন্তকালে মায়েদের অগ্রসর মানসিকতা, নিবেদিত মনোভাবের কারণেই সম্ভব হয় রোযাকে যথাযথ উৎযাপন করা। নিজেরে ইবাদত বন্দেগির পাশাপাশি ঘরের সার্বিক ব্যবস্থাপানা, রান্না-বান্না, সন্তানের যত্ন, কর্মস্থলে ব্যবস্থা সব মিলিয়ে নারীর জন্য যথেষ্ট পরিশ্রমের মাস রমযান। তবুও আমাদের মায়েরা আগ্রহ ভরে রোযাকে উৎসবমুখর করে তোলেন। নারীদের রোযাকে সঠিকভাবে আদায়ের জন্য জানতে হবে ৫টি মাসয়ালা।
গর্ভাবস্থায় রোযা
অন্তঃসত্ত্বা নারীকে যদি কোন মুসলমান পরহেজগার অভিজ্ঞ ডাক্তার বলেন, রোযা রাখলে তার নিজের বা গর্ভের বাচ্চার প্রাণনাশের বা মারাত্নক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাহলে সেই নারী রোযা নাও রাখতে পারেন। পরে শুধু কাযা করে নিলেই হবে।
أن الله وضع عن المسافر شرط الصلاة ، وعن الحامل أو المرضع الصوم …
(তিরমিযি শরীফ ১/১৫২, নাসায়ি ১/২৪৭, হেদায়া ১/২২২, বাদায়েউস সানায়ে ২/২৫০)
স্তন্যদানকারিনীর রোযা
স্তন্যদানকারিনীর রোযার বিষয়টাও অনেকটাই অন্তঃসত্ত্বা রোযার মতো। অর্থাৎ- স্তন্যদানকারিনী যদি নিজে রোযা রাখলে দুগ্ধপোষ্য শিশুর প্রাণনাশ বা অন্য কোন মারাত্নক ক্ষতি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে তাহলে তিনি রোযা না রাখতে পারেন। তবে পরে কযা করে নিতে হবে।
ওষুধ-বড়ি খেয়ে ঋতুস্রাব বন্ধ রেখে রোযা রাখা
নারীদের পিরিয়ড হওয়াটা একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। আল্লাহ তায়ালা তাদের এভাবেই সৃষ্টি করেছেন। এতে তাদের কোন দোষ বা ত্রুটি নেই। পিরিয়ড অবস্থায় নামায মাফ। আর রোযা পিরিয়ড অবস্থায় রাখা নিষেধ তবে এই রোযা না রাখতে তাদের কোন গোনাহ নেই। তবে পরে তা কাযা করতে হবে। এই জন্যই রমযান মাসে পিরিয়ড হলে তা নিয়ে মনঃক্ষুণ হওয়ার কোন যুক্তি নেই। তবে কেউ যদি শুরু হওয়ার আগেই ঔষধ-বড়ি খেয়ে রোযা রাখেন তবে সে রোযা সহিহ হয়ে যাবে। ফলে আবার এই রোযা কাযাও করতে হবে না। (শামী ১/৫০৮, আলমগীরি ১/৩৮, বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৯, ফতহুল কাদির ১/১৪৫, আপকে মাসায়েল ৩/২০৭)
লিপিস্টিক বা লিপজেল
রোযা অবস্থায় নারীরা লিপিস্টিক বা লিপজেল ব্যবহার করতে পারবে। তবে সতর্ক থাকতে হবে যেন মুখে চলে না যায়। যদি মুখে চলে যায় তবে রোযা মাকরুহ হবে। গলায় স্বাদ অনুভব করলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। (কিতাবুল ফাতওয়া ৩/৩৯৮)
তরকারির লবন চাখা
নারীরা রান্না করার সময় তরকারির লবণ ও বিভিন্ন অবস্থা পরীক্ষা করার জন্য জিহবার মাধ্যমে তরকারির স্বাদ নিলে রোযার কোন ক্ষতি হবে না। (আল ফিকহুল মুয়াসসার, বেহেশতি যেওর)
লেখকঃ নাজমুল হাসান সাকিব