যেসব কারণে ইতিকাফ ভেঙে যায়

 পবিত্র রমজান উপলক্ষে চলছে রমজানের শেষ দশকের বিশেষ আমল ইতিকাফ। বিশেষ নিয়তে বিশেষ অবস্থায় আল্লাহ তা’য়ালার আনুগত্যের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে। ইতিকাফরত অবস্থায় বান্দা নিজেকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্য সব কিছু থেকে আলাদা করে নেয়। একান্তকভাবে মশগুল হয়ে পড়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিরন্তর সাধনায় প্রভূর প্রেমের মগ্নতা।

শেষ দশকের সুন্নত ইতিকাফকারীর জন্য মানবীয় ও শর’য়ী বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো কারণে মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়। বের হলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। সুতরাং ফরজ গোসল ছাড়া গরম ও গায়ের দুর্গন্ধের কারণে গোসল করার জন্য বের হওয়া জায়েজ নেই। হ্যাঁ, যদি অতীব প্রয়োজন হয় এবং মসজিদে গোসলের সুব্যবস্থা থাকে, তাহলে মসজিদেই গোসল করবে অথবা ভেজা গামছা দিয়ে শরীর মুছে ফেলবে। আর ইস্তেঞ্জা করতে গিয়ে অজু পরিমাণ স্বল্প সময়ের মধ্যে সাবান ইত্যাদি ছাড়া স্বাভাবিক গোসল করতেও কোনো অসুবিধা নেই। -রদ্দুল মুহতার: ২/৪৪০

জানাজায় অংশ নেওয়া ও রোগীর সেবা ইত্যাদির জন্য মসজিদ থেকে বের হলেও ইতিকাফ ভেঙে যাবে। তবে অতি কাছে হলে যেতে পারবে। -ফাতাওয়া শামি: ২/২১৩

ইতিকাফ অবস্থায় মেসওয়াক অথবা ব্রাশ করার জন্য মসজিদের বাইরে যাওয়া যাবে না। গেলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। হ্যাঁ, অজু করার জন্য বের হলে তখন মেসওয়াকও করে নেবে। শুধু মেসওয়াক বা ব্রাশ করার জন্য বাড়তি সময় যাতে নষ্ট না হয়। –ফাতাওয়ায়ে শামি: ৩/৪৩৯

এ হিসাবে ফোনে কথা বলার জন্যও মসজিদ থেকে বের হওয়ার অনুমতি নেই।

ইতিকাফের জন্য রোজা শর্ত। তাই কেউ যদি অসুস্থতার দরুন অপারগ হয়ে রোজা ভাঙতে হয়। তবে ইতিকাফও ভেঙে যাবে। –ফাতাওয়ায়ে শামি: ৩/৪৩১

অসুস্থতার দরুন নিরুপায় হয়ে ডাক্তারের কাছে গেলেও ইতিকাফ ভেঙে যাবে। তবে অপারগতার দরুন গোনাহগার হবে না। –ফাতাওয়া কাজি খান: ১/২২৩

ইতিকাফে যেসব কাজ করা মাকরুহ। ইতিকাফে যেকোনো অপ্রয়োজনীয় কাজই মাকরুহ। যেমন- অনর্থক গল্প করা, বিনা প্রয়োজনে বেচাকেনা করা, মোবাইলে গেম খেলা, ফেসবুকে চ্যাট করা ইত্যাদি। একান্ত প্রয়োজনের ক্ষেত্রে বেচাকেনা করার অনুমতি আছে। ব্যবসায়ী মালামাল মসজিদে নিয়ে আসা মাকরুহ। যদিও একান্ত প্রয়োজনে বেচাকেনা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিবেকবান লোক তা মোটেও পছন্দ করবে না।

ইতিকাফ অবস্থায় চুপ করে বসে থাকা কোনো ইবাদত নয়, তাই ইবাদত মনে করে চুপ করে বসে থাকা মাকরুহ। -আহকামে ইতিকাফ ফাজায়েল ও মাসায়েল: ৬৫

নাজমুল হাসান সাকিব

Previous articleনাজাতের শেষ দশক; গুরুত্বপূর্ণ ৭ আমল
Next articleযাকাত না দেওয়ার ভয়াবহ পরিণতি
মুফতি নাজমুল হাসান সাকিব
নাম: নাজমুল হাসান সাকিব পিতা: মুজিবুর রহমান স্থায়ী ঠিকানা: বাহেরবালী, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ। বর্তমান ঠিকানা: বসুন্ধরা, বারিধারা, ঢাকা ১২২৯ পড়াশোনাঃ- বাহেরবালী দারুল উলূম নূমানিয়া মাদরাসা, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ। (নূরানী টু হেদায়াতুন্নাহ্) জামিয়াতুস সালাম মদিনাবাগ, মুগদা, সবুজবাগ, ঢাকা। (কাফিয়া-শরহে বেকায়া) মারকাজুল উলূম আল-ইসলামিয়া মান্ডা, মুগদা, সবুজবাগ, ঢাকা। (আরবী স্নাতক ৪র্থ বর্ষ) মদিনাতুল উলূম বসুন্ধরা মাদরাসা ( হেদায়া) মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা। (এম এ- মাস্টার্স) আল মারকাজুল ইসলামী বাংলাদেশ। (ইসলামি আইন ও গবেষণা বিভাগ) পেশা: লেখালেখি ও পড়াশোনা। (ভবিষ্যত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এখনো অধ্যায়ণরত)।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here