আকাশে শাওয়ালের বাঁকা চাঁদ। মানে শেষ হলো মাহে রমজান। শেষ হলো প্রাপ্তির মহা উৎসব। রহমত বরকত ও নাজাতের করুণায় সিক্ত এ জমিন। রমজান শুধু একটি মাসে সীমাবদ্ধ নয়। বরং রমজান ছড়িয়ে আছে আমাদের জীবন জুড়ে। বছর জুড়ে। মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আছে রমজানের প্রভাব। রোজা আমাদের ঈমান শেখায়, আল্লাহ ও বান্দার ঈমান সুদৃঢ় করে। রোজা এনে দেয় জান্নাতের বার্তা। ইসলামের মৌলিক বিষয়ের সাথে বন্ধন রচনা করে দেয় রমজানুল মোবারক। রমজান এক জীবনঘনিষ্ঠ বিধান। মুমিনের অন্তর আবাদ হয় ঈমানের বীজে। সুগন্ধময় হয় কালিমার ফুলে। আর ঈমানের সূতিকাগার ওহি। ওহি বা সকল আসমানি কিতাব নাযিল শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাসে। বিশেষ করে পবিত্র আল-কুরআনও রমজানে নাযিল শুরু হয়েছে। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন,
شهر رمضان الذي أنزل فيه القرآن هدي للناس وبينت من الهدي والفرقان…
তরজমাঃ- রমজান মাস, যে মাসে মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য এবং সঠিক পথের বর্ণনা ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্য বর্ণনা করার জন্য অবতীর্ণ করা হয়েছে কুরআন। (সূরা বাকারা, আয়াত ঃ ৮৫)
রমজানের সঙ্গে ইসলামের প্রথম বাক্য ঈমানের গভীর সেতুবন্ধন রয়েছে। নামাজের প্রশিক্ষন হয় তারাবি, কিয়ামুল লাইল, তাহাজ্জুদ, আর নফলের ভেতর দিয়ে। মাহে রমজানে রোজার প্রসঙ্গ প্রধানতম। মানুষের পাপ-পঙ্কিলতাকে পুড়িয়ে ছাই করে দেয় রোজা। কঠোর সাধনায় ব্রত করে মুমিনকে খাঁটি করে তোলে রমজান। ঈমান নামাজ ও রোজার সম্পর্ক যেমন রমজানকে গুরুত্ব্যপূর্ণ করেছে, তেমনি হজের বিধানও বাড়িয়ে দেয় রমজানের মর্যাদা। যে মক্কা মোকাররমার কাবা ঘরে আমরা হজ্ব পালন করি, সে মক্কাও বিজয় হয়েছিল রমজান মাসে। মহানবি সা. বলেন,
فإن عمرة في رمضان تقضي حجة معي
তরজমাঃ- যারা রমজান মাসে উমরা হজ্ব পালন করল, তারা যেন আমার সঙ্গে হজ্ব আদায় করলো। (বুখারী ঃ ১৭৬৪)।
কারণ, রমজানে প্রতিটি আমলের ফযিলত ৭০ গুণ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়; আর ৭০টি নফল একটি ফরযের সমান। ইসলামের অন্যতম বিধান যাকাতের সাথে রমজানের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
যাকাত অর্থ পবিত্রতা, তেমনি রোজার মানে হলো আগুনে পুড়ে সোনা খাদমুক্ত বা খাঁটি করা। যাকাত মানে প্রবৃদ্দি আর রমজানে প্রতি ইবাদতের সাওয়াব আল্লাহ ৭০ গুণ বৃদ্ধি করে দেন। ইসলামের প্রতিটি বিধানের সাথে রোজার হৃদ্যতা রয়েছে। তাছাড়া রোজার সাওয়াব বছরব্যপী পাওয়ার জন্য রয়েছে শাওয়ালের রোজা রাখা দরকার।
(অচিরের ” শাওয়ালের রোজার ফযিলত ও নিয়ম” শিরোনামে ব্যক্ত করছি তথ্যাদি)