আল্লাহ্ তায়ালা মানব জাতীকে সৃষ্টির পর সঠিক পথ দেখাতে যুগ যুগ ধরে প্রেরন করেছেন অসংখ্য নবী-রাসূল দের। তারা এসে শিখিয়েছেন কিভাবে দ্বীনের পথ ধরে চলতে হয় তার জন্য জানতে হয় জায়েয না জায়েয হালাল হারাম কেননা এসব জানার দ্বারা বেচে থাকা যায় নিষিদ্ধ বিষয় থেকে আর পালন করা যায় আবশ্যকীয় হুকুম ।
দুনিয়ায় বেচে থাকতে শরয়ী হুকুম মানা আবশ্যক ইসলামে পালনিয় ফরজ বিধানে পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান।
আল্লাহ তায়ালা পর্দাকে নারীর পবিত্রতার রক্ষাকবজ হিসেবে আখ্যায়িত করে সুরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াতে বলেন-
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ قُل لِّأَزۡوَٰجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَآءِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ يُدۡنِينَ عَلَيۡهِنَّ مِن جَلَٰبِيبِهِنَّۚ ذَٰلِكَ أَدۡنَىٰٓ أَن يُعۡرَفۡنَ فَلَا يُؤۡذَيۡنَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ٥٩﴾ سورة الأحزاب 59.
তরজমা- হে নবী তুমি তোমার স্ত্রী ও কন্যাদেরকে এবং মুমিনদের স্ত্রীদের বলে দাও তারা যেন তাদের জিল-বাবের কিছু অংশ নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দেয়, তাদেরকে চেনার ব্যাপারে এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা হবে। ফলে তাদেরকে কষ্ট দেয়া হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু।
যেন তারা নিজেদেরকে পর্দায় ঢেকে রাখতে পারে। এতে করে নিজেদের ইজ্জত আবরু রক্ষা পাবে, এজন্য যে তারা সতী ও পবিত্র নারী। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সতর্ক্য বার্তা فَلَا يُؤۡذَيۡنَ যেন এদেরকে কষ্ট দেয়া না হয়। কেননা নারীদের সৌন্দর্য সম্পর্কে জানা দ্বারা তাদের কষ্ট দেয়া এবং যারা দেখে তাদের ফিতনা ও অপরাধে জড়িত হওয়ার প্রবল আশংকা।
বৃদ্বা রমণিগণ যাদের যৌবন হ্রাস পেয়েছে ফলে তারা বিবাহের ইচ্ছে ছেড়ে দিয়েছে তাদের জিল-বাব ব্যবহার না করা চেহারা ও কবজি-দ্বয় খোলা রাখা দ্বারা ফিতনার আশংকা না থাকায় তাদের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পর্দা করার ব্যাপারে শীথিলতা প্রদর্শনের অনুমতি দিয়েছেন।
তাদের বিষয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন
বৃদ্ধা নারীরা, যারা বিয়ের প্রত্যাশা করে না, তাদের জন্য কোন দোষ নেই, যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে তাদের কিছু পোষাক খুলে রাখে [সূরা নূর, আয়াত: ৬০]
আয়াতের ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা’আলার বাণী-
أَن يَضَعۡنَ ثِيَابَهُنَّ غَيۡرَ مُتَبَرِّجَٰتِۢ بِزِينَةٖۖ
তরজমা– যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে তাদের কিছু পোশাক খুলে রাখ।
উল্লেখিত আয়াতে তাদের কোন দোষ নেই এ কথার অর্থ হলো গুনাহ গার হবে না। অর্থাৎ বয়স্ক বা বৃদ্ধা নারীরা যদি তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে পোশাক খুলে রাখে, এতে তাদের কোন গুনাহ হবে না। এ কথা বলার পরপর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
وَأَن يَسۡتَعۡفِفۡنَ خَيۡرٞ لَّهُنَّۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٞ (60)
‘আর যদি এ থেকে বিরত থাকে তবে তাদের জন্য অতি উত্তম’। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হিজাবকে বৃদ্ধা ও বয়স্ক নারীদের জন্য উত্তম বলে ঘোষণা করেন এতে অনুভব করা যায় যুবতী নারীদের জন্য পর্দা করা অতিগুরুত্বপূর্ণ সেটা চিন্তা করলেই বুঝা যাবে।
পর্দা নারীদের পবিত্রতা
আল্লাহ তা’আলা সুরা আহযাবের ৫৩ নাম্বার আয়াতে বলেন-
﴿وَإِذَا سَأَلۡتُمُوهُنَّ مَتَٰعٗا فَسَۡٔلُوهُنَّ مِن وَرَآءِ حِجَابٖۚ ذَٰلِكُمۡ أَطۡهَرُ لِقُلُوبِكُمۡ وَقُلُوبِهِنَّۚ ﴾] سورة الأحزاب.
তোমারা নবী স্ত্রীদের কাছে কোনো বস্তু চাইলে পর্দার আড়াল হতে তালাশ কর, কেননা তা তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিক পবিত্র।
উপরে উল্লেখিত আয়াতে কারীমায় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পর্দাকে মুমিন নারী- পুরুষের পবিত্রতা বলে আখ্যায়িত করেন।
চোখ যখন কোন কিছু দেখে, তখন তার প্রতি আকৃষ্ট হয় অদেখা বস্তুর প্রতি অনাগ্রহী, চোখেদেখলেই অন্তর তার প্রতি আকৃষ্ট হয়। তবে কোন কোন সময় নাও হতে পারে। সুতরাং যখন নারীদের দেখবে না, তখন তাদের অন্তর পবিত্র থাকবে। তাদের মধ্যে কোন ফিতনার আশঙ্কা দেখা দিবে না।
নারীরা যখন পর্দা করবে পুরুষের সামনে প্রকাশ্যে আসবে না তখন যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে, তাদের আশা নিরাশায় পরিণত হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রমণীদের উদ্দেশ্যে বলেন তারা যেন “ পরপুরুষের সাথে কোমল কণ্ঠে কথা না বলে। যদি বলে তাহলে যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে সে প্রলুব্ধ হবে”