Sunday, April 14, 2024
No menu items!
Homeইসলামি শিষ্টাচারসাক্ষাতের জন্য উপযুক্ত সময় নির্বাচন করা, বড়দের সাথে কথোপকথনে এবং বড়দের সম্মান...

সাক্ষাতের জন্য উপযুক্ত সময় নির্বাচন করা, বড়দের সাথে কথোপকথনে এবং বড়দের সম্মান করা নিয়ে ইসলামী শিষ্টাচার যা বলে!

সাক্ষাতের জন্য উপযুক্ত সময় নির্বাচন করা, বড়দের সাথে কথোপকথনে এবং বড়দের সম্মান করা নিয়ে ইসলামী শিষ্টাচার যা বলে!
ইসলামী শিষ্টাচার ৬ষ্ট পর্ব: দ্বীন শিক্ষা.কম

১২. সাক্ষাতের জন্য উপযুক্ত সময় নির্বাচন…

কারো সাথে সাক্ষাতের জন্য উপযুক্ত সময় নির্বাচন করা উচিত। যার সাথে আপনি সাক্ষাৎ করতে গিয়েছেন, তার কাছে আপনার এতটুকু সময় বসা উচিত, তার কাছে আপনার মর্যাদার সাথে যতটুকু সময় মানানসই। তার অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত। সুতরাং দীর্ঘ সময় বসে থেকে তার বোঝা হবেন না। সাক্ষাতের জন্য উপযুক্ত নয় এমন সময় তার সাথে সাক্ষাৎ করতে যাবেন না। যেমন: খাবার, ঘুম ও বিশ্রাম এর সময়।
ইমাম নববী রহ. তদীয় গ্রন্থ “আল আযকারে” সালাম সংক্রান্ত মাসআলা উল্লেখ করেন যে, মুসলমানদের জন্য সমীচীন হল সৎকর্মশীল ব্যক্তিবর্গ, প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় -স্বজনকে মাঝে মাঝে দেখতে যাওয়া। তাদেরকে সম্মান করা। তাদের খোঁজ খবর নেওয়া। তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা। এগুলি যথাযথভাবে আঞ্জাম দেয়া প্রেক্ষাপট, অবস্থা, পদ-মর্যাদা ও অবসরের বিভিন্নতার ভিক্তিতে বিভিন্ন হয়ে থাকে। প্রত্যেক মুসলমানের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ এমনিভাবে হওয়া উচিত, যেভাবে তারা অপছন্দ না করে। সাক্ষাতের সময় এমন হওয়া উচিত যা তাদের জন্য আনন্দদায়ক ও তৃপ্তিকর হয়। এ সম্পর্কে প্রচুর হাদিস ও সাহাবায়ে কেরামের উক্তি বিদ্যমান রয়েছে।

১৩. বড়দের সাথে কথোপকথনের নিয়মাবলী…

যার সাথে আপনি সাক্ষাৎ করতে গিয়েছেন, তার সাথে যখন আপনি কথা বলবেন, তখন সংক্ষিপ্তভাবে যা উপযোগী তাই কেবল বলবেন। আপনি যদি মজলিসের মধ্যে সবার ছোট হন, তাহলে কোনো কথা বলবেন না। তবে আপনাকে যদি কোন প্রশ্ন করা হয়, তাহলে উপবিষ্ট ব্যক্তিদের দিকে মুখ করে কেবল তার উত্তর দেবেন। আর আপনি যদি মনে করেন যে, আপনার কথা বলা যথাযথ ও সঠিক হবে এবং উপস্থিত সুধিবৃন্দকে খুশি করবে তাহলে বলতে পারেন। কথায় শালীনতা বজায় রাখবেন। স্থানের আদব বজায় রাখা হতে উদাসীন হবেন না। আপনার বসার ধরন, কথাবার্তা ও বক্তব্যের উপস্থাপন শৈলীতে মার্জিত ভাব বজায় রাখুন।

১৪. বড়দের সম্মান করা…

যখন আপনি কোন মজলিসে উপস্থিত হবেন তখন সকলকে সালাম দেবেন। যদি মজলিসের সকলের সাথে মুসাফাহা করতে চান, তাহলে তাদের মধ্যে যিনি সবার চেয়ে বেশি মর্যাদাবান অথবা জিনিস সবার চেয়ে বেশি জ্ঞানী কিংবা জিনি সকলের চেয়ে আল্লাহভীরু অথবা যিনি সকলের চেয়ে বেশি বয়স্ক কিংবা শরীয়ত অনুমোদিত ভালো কোন গুণে গুণান্বিত তার থেকে শুরু করবেন।
ঐ ব্যক্তি থেকেই শুরু করবেন না, যাকে আপনি প্রথম কাতারে দেখেন যদি তার মর্যাদা উপস্থিত অন্যদের তুলনায় বেশি না হয়। আর তার থেকে শুরু করার ফলে তার চেয়ে মর্যাদাবান ব্যক্তি পশ্চাতে পড়ে যায়।
মুসাফাহার জন্য সুশীল সমাজের নিয়ম হলো, মুসাফাহা ঐ ব্যক্তি থেকে শুরু করা যিনি উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বর। আর আপনি যদি উপস্থিতদের মধ্যে যে ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ তাকে চিনতে না পারেন তাহলে সবার চেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির মাধ্যমে মুসাফাহা করা শুরু করবেন। কেননা বয়স্ক সাধারণত অস্পষ্ট থাকে না এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে যখন উপস্থিত সকলেই মর্যাদায় সমান সমান হবে।
মহানবী সা. বলেছেন,
كبر كبر.
অর্থাৎ বড়কে শ্রদ্ধা করো। বড়কে শ্রদ্ধা করো। অপর বর্ণনায় আছে,
عن رافع بن خديج انهما قالا خرج عبد الله بن سهل بن زيد ومحيصة بن مسعود بن زيد حتى اذا كان بخيبر تفرقا في بعض ما هنالك ثم اذا محيصة يجد عبد الله بن سهل قتيلا فدفنه ثم اقبل إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم هو و حويجة بن مسعود و عبد الرحمن بن سهل وكان اصغر القوم فذهب عبد الرحمن ليتكلم قبل صاحبيه فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: 《كبر》 الكبر في السن.
অর্থাৎ বয়সের দিক দিয়ে বড় ব্যক্তিকে সম্মান করো।
( বুখারী শরীফ ২/১০১৭, মুসলিম শরিফ ২/৫৬)

এই কথাটিই আবু ইয়ালা এভাবে বলেছেন-
ابدؤوا بالكبراء ، أو قال: الأكابر.
তোমরা মহান ব্যক্তিদের থেকে শুরু করো।

মুফতি নাজমুল হাসান সাকিব
মুফতি নাজমুল হাসান সাকিব
নাম: নাজমুল হাসান সাকিব পিতা: মুজিবুর রহমান স্থায়ী ঠিকানা: বাহেরবালী, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ। বর্তমান ঠিকানা: বসুন্ধরা, বারিধারা, ঢাকা ১২২৯ পড়াশোনাঃ- বাহেরবালী দারুল উলূম নূমানিয়া মাদরাসা, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ। (নূরানী টু হেদায়াতুন্নাহ্) জামিয়াতুস সালাম মদিনাবাগ, মুগদা, সবুজবাগ, ঢাকা। (কাফিয়া-শরহে বেকায়া) মারকাজুল উলূম আল-ইসলামিয়া মান্ডা, মুগদা, সবুজবাগ, ঢাকা। (আরবী স্নাতক ৪র্থ বর্ষ) মদিনাতুল উলূম বসুন্ধরা মাদরাসা ( হেদায়া) মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা। (এম এ- মাস্টার্স) আল মারকাজুল ইসলামী বাংলাদেশ। (ইসলামি আইন ও গবেষণা বিভাগ) পেশা: লেখালেখি ও পড়াশোনা। (ভবিষ্যত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এখনো অধ্যায়ণরত)।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments