Saturday, April 20, 2024
No menu items!
Homeপ্রশ্ন এবং উত্তর/ Questions and Answersসামুদ্রিক কোন-কোন প্রাণী খাওয়া যায় এবং সি-ফুড খাওয়া এর বিধান

সামুদ্রিক কোন-কোন প্রাণী খাওয়া যায় এবং সি-ফুড খাওয়া এর বিধান

সামুদ্রিক কোন-কোন প্রাণী খাওয়া যায় এবং সি-ফুড খাওয়া এর বিধান

প্রশ্নঃ সামুদ্রিক কোন কোন প্রাণী (সি-ফুড) খাওয়া জায়েজ?
যেমন:শামুক,ঝিনুক, কাঁকড়া, অক্টোপাস, স্কুইড ইত্যাদি উল্লেখিত সি -ফুড এর হুকুম কী?

উত্তরঃ মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, সামুদ্রিক সব ধরনের সি-ফুড খাওয়া জায়েজ, যদি রুচিসম্মত হয় এবং এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর না হয় ও এর মধ্যে বিষক্ত কিছু না থাকে। যদিও হানাফী কিছু উলামায়ে কেরাম এগুলোকে মাকরুহ বলেছেন। তবে এগুলোকে হারাম বলার সুযোগ নেই। কিন্তু বিশ্বের মেজরিটি আলেমদের মতামত অনুসারে আমরা এগুলোকে জায়েয বলেছি। সুতরাং শামুক,ঝিনুক, কাঁকড়া, অক্টোপাস রুচি সম্মত হলে খেতে পারবেন, কোন সমস্যা নেই।

হানাফী মাযহাবের মতামত হল-: মাছ ছাড়া অন্য সকল প্রাণী খাওয়া জায়েজ নেই। আর যেহেতু অক্টোপাস, স্কুইড (সামুদ্রিক বিশেষ প্রাণী) শামুক,ঝিনুক ইত্যাদি মাছ নয়, তাই এগুলো খাওয়াও না জায়েজ।
{ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া ৩/১১৪, আল-বাহরুর রায়েক ৮/৪৮৫, হাশিয়ায়ে তাহতাবী ৪/৩৬০, ইমদাদুল ফাতওয়া ৪/১১৮, বাদায়েউস সানায়ে ৬/১৭৩}

প্রথমতঃ এগুলো কুরআনে বর্ণিত وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ الْخَبَآئِثَ খাবায়েস এর অন্তর্ভুক্ত। সূরা আ’রাফে আল্লাহ তাআলা এগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। “খাবায়েস” বলা হয় যা মানুষ স্বভাবগত ঘৃণা করে। আর মাছ ছাড়া অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী রুচিশীল মানুষ স্বভাবগত’ই ঘৃণা করে। সুতরাং সেগুলো কুরআনের হুকুম অনুযায়ী নিষিদ্ধ।

দ্বিতীয়তঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম এ ধরনের প্রাণী খেয়েছেন বলেও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। উপরন্ত আব্দুর রহমান বিন ওসমান রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক চিকিৎসককে ব্যাঙ মেরে ঔষধ বানাতে নিষিদ্ধ করেছিলেন।
{আবু দাউদ, হাদিস ৩৮৭১}

তৃতীয়তঃ আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে দু’ধরনের মৃত জীব ও দু’ধরনের রক্ত হালাল করা হয়েছে।
মৃত জীব দুটি হলো: মাছ ও ফড়িং।
আর দুই ধরনের রক্ত হলো: কলিজা ও প্লীহা।
{ ইবনে মাজাহ ৩৩১৫, মুসনাদে আহমদ ৫৬৯০, দারাকুতনী ৪৬৮৭}
তবে শাফেয়ী মাযহাবসহ আরব বিশ্বের আলেমদের এ বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে।

তাহলে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, মুহতারাম মিজানুর রহমান আজহারী ফিকহে হানাফীর উপর আমল করেন না, তাই তিনি বরাবরের মতো লামাজহাবী প্রন্থা অবলম্বন করে সী-ফুড নিয়ে তার ফতুয়ার ইতি টানলেন। সুতরাং শামুক, ঝিনুক (অক্টোপাস, স্কুইড) সামুদ্রিক বিশেষ প্রাণী ইত্যাদি খাবেন কিনা; এর সম্পূর্ণটা নির্ভর করছে আপনার মাযহাব মানা আর না মানার উপার।

١.لا يأكل من حيوان الماء إلا السمك. وقال: مالك و جماعة من أهل العلم بإطلاق جميع ما في البحر الخ
《هداية، كتاب الذبايح ٤٤٢/٤، تبيين الحقائق ٤٦٩/٦ 》
٢. ولا يحل حيوان مائي إلا السمك. 《در المختار ٤٤١/٩》

প্রশ্নঃ কোনটা মাছ আর কোনটা মাছ না এটি কিভাবে নির্ণয় করব?
উত্তরঃ এর মূল বিষয় হল, জেলে এবং নদীর প্রানী বিশেষজ্ঞদের মতে যেগুলো মাছের মধ্যে গণ্য, যেগুলো মাছ হিসেবে স্বীকৃত হবে কেবল ঐগুলো’ই খাওয়া যযাবে।
আর যেসব তাদের মতে মাছ নয় বরং সামুদ্রিক প্রাণী তাহলে সেগুলো খাওয়া যাবে না।
সেই হিসেবে জেলে ও সামুদ্রপ্রানী বিশেষজ্ঞদের মতে চিংড়ি এটা মাছের অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু কাঁকড়া অক্টোপাস স্কুইড কে কেউ মাছ বলে না। বরং এসব সামুদ্রিক প্রাণী। এ কারণে চিংড়ী খাওয়াতে সমস্যা নেই। কিন্তু কাঁকড়া, অক্টোপাস, স্কুইড ইত্যাদি মাছ না হওয়ায় তা ভক্ষণ করার অনুমতি দেওয়া হয় না।

কেন্দ্রীয় ইফতা বোর্ডঃ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments