নাজমুল হাসান সাকিব:
বিবাহ বা বিয়ে হল একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি, যার মাধ্যমে দু’জন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এটি মানুষ ও পরিবারের জন্য খুব একটা আনন্দের মুহূর্ত। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, বরপক্ষের কারণে বেশ বিপাকে পড়তে হয় কনের বাবার। এমন পরিস্থিতিতে কনের অসহায় বাবার পক্ষ নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে অল্প শব্দে একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট করেছেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। তিনি লিখেছেন,
“মেয়েটিকে তার পিতা-মাতা খাইয়ে-পরিয়ে বড় করে, শিক্ষা-দীক্ষা দিয়ে আপনার হাতে তুলে দিয়েছেন। সেই খুশিতে আপনার উচিত সবাইকে ওয়ালিমা খাওয়ানো।
সেটা না করে অনেকে উল্টো দর কষাকষি করে কনের পিতার ওপর কয়েকশ লোক খাওয়ানোর বোঝা চাপিয়ে দেয়, এদের বরযাত্রী বলা হলেও আদতে তারা বদযাত্রী।”
অতঃপর তিনি আরও লিখেন— “আপনার আত্মীয় ও বন্ধু বান্ধবদের খাওয়ানোর দায়িত্ব আপনার, আপনার শ্বশুর বা ছেলের শ্বশুরের নয়। সুতরাং তাকে দিয়ে সে কাজ করানো জুলুম। তাছাড়া নিজের আত্মীয় তথা বেহাই সাহেবের উপর জুলুম করে পুরো এলাকার কাছের দূরের সব মানুষকে খাওয়ালেন-এতে আপনার অর্জনটা কী? অনেক সময় খাইয়েও বদনামের ভাগিদার হতে হবে। আল্লাহ আমাদের এই বদ (প্রথা) রসমের বিরুদ্ধে সোচ্ছার হওয়ার তাউফীক দান করুন।”
অথচ এব্যাপারে ইসলামি আইন হলো, বিয়ে উপলক্ষে বরযাত্রী গমন ও মেয়ের বাড়িতে আপ্যায়ন যদি কোনো ধরনের বাধ্যবাধকতাহীন এবং সানন্দে হয়, তাহলে তা বৈধ, অন্যথায় অবৈধ। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, মেয়ের বাড়িতে বরযাত্রীদের দাওয়াত গ্রহণ ও মেহমানের সংখ্যা নিয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়, যা সত্যি নিন্দনীয়। শরিয়তের দৃষ্টিতে এটি মেয়ের পরিবারের প্রতি অবিচার। সুতরাং এমন কাজ পরিহার করা উত্তম। (আস-সুনানুল কুবরা, হাদিস : ১১৫৪৫, ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ : ৭/৫২২)।
বিয়ে একটি ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক ইবাদত। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমরা বিবাহযোগ্যদের বিবাহ সম্পন্ন করো, তারা অভাবগ্রস্ত হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছলতা দান করবেন; আল্লাহ তো প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞানী।’ (সুরা: ২৪ নুর, আয়াত: ৩২)।
সুন্নত তরিকায় সম্পাদিত বিয়ে বরকতময় হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, নিশ্চয় সে বিয়ে বেশি বরকতপূর্ণ হয়, যে বিয়েতে কম খরচ হয়। (মুসনাদে আহমাদ ও মুস্তাদরাকে হাকিম)।