মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন:
আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্মানিত করেন এবং যাকে ইচ্ছা অপমানিত করেন, যাবতীয় কল্যাণ তারই হাতে।” (সূরা আল ইমরান-২৬)। আল কোরআনের অন্যত্রে ইরশাদ হয়েছে , ‘সম্মান তো আল্লাহ, তার রাসূল এবং মুমিনদের জন্যই। কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না।’ (সূরা মুনাফিকুন ৬৩: ৮)। বান্দাকে সম্মান দান করার ক্ষমতা শুধু মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের হাতে। তেমনি লাল সবুজের ফুটন্ত গোলাপ অসাধারণ প্রতিভা ও সুমধুর কণ্ঠের অধিকারী ১৩ বছরের ক্ষুদে হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিমকে বিশ্বের কাছে সম্মানিত করেছে। একই সাথে তার মাধ্যমে লাল সবুজ বাংলাদেশকেও এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। গত ১১ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পবিত্র মক্কা নগরীতে অনুষ্ঠিত ৪২তম বাদশাহ আবদুল আজীজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় “খ” গ্রুপে অংশগ্রহণ করে বিশ্বের ১১১টি দেশের ১৫৩জন কোরআন প্রতিযোগীর মধ্যে ৩য় স্থান অর্জন করে এক অনন্য কৃতিত্ব অর্জন করে। এই প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অধিকার করায় হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিম পুরস্কার হিসেবে পেয়েছে ১ লক্ষ সৌদি রিয়াল যা বাংলাদেশের মুদ্রায় সাড়ে সাতাশ লক্ষ টাকা ও সম্মাননা ক্রেস্ট। এর আগে ২০২২ সালের মার্চ মাসে ইরানের রাজধানী তেহরানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১৯০ জন প্রতিযোগীকে টপকে ১ম স্থান অধিকার করার অনন্য গৌরব অর্জন করেছিলেন এবং লিবিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বেনগাজীতে অনুষ্ঠিত ১০ম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় ৭ম স্থান অর্জন করেছিলেন। এমনকি ২০২০ সালের রমজান মাসে ইফতারের পূর্বে বাংলাভিশন চ্যানেলে মাসব্যাপী সম্প্রচারিত ‘পুষ্টি কোরআনের আলো’ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিল হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরীম।
সে ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার ভাদ্রা গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা হাফেজ আবদুর রহমান মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন এবং মা গৃহিণী। মাত্র সাড়ে ৯ বছরে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্ত করেন। সে ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত “মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী মাদরাসা’য় অধ্যয়ন করছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেন পবিত্র কোরআনের ধারক ও বাহক এই হাফেজকে আন্তর্জাতিক মানের আলেম ও দ্বীনের খাদেম এবং ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার একজন নির্ভীক সৈনিক হওয়ার তাওফীক দান করুক।
লেখক : প্রচার ও প্রকাশনা সচিব, বাংলাদেশ মুসলমান ইতিহাস সমিতি।