নাজমুল হাসান সাকিব:
লেখকদের জাতীয় সংগঠন ‘বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম’। ফোরামকে ভালোবাসি মনের গভীর থেকে। ভালোবাসি ফোরামের সকল সদস্যকে। ছোটদের স্নেহ করে কাছে টানার জীবন্ত প্রতিচ্ছবি ‘লেখক ফোরাম’। প্রবীনরা নবীনদের অনুপ্রাণিত করে, কাছে টানে, আগামী দিনে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখায়। এদেশে এরকম একে অপরের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি বিরল হলেও ‘লেখক ফোরাম’ এ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ।
বাঙালি জাতি হিংসুটে। কেউ এগিয়ে যেতে চাইলে সহযোগিতা তো দূরের কথা; বরং অনেকে পেছনে টেনে ধরে। পথ রুদ্ধ করে দাঁড়ায়। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ এ দেশে থেকেও ‘বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম’ ভিন্ন ভাবনা আর ভিন্ন চিন্তা লালন করে । এজন্য লেখক ফোরাম দিনদিন সবার ভালোবাসার স্থানে জায়গা করে নিচ্ছে।
গতবছর অক্টোবর মাসে পঞ্চম কাউন্সিলে সংগঠনের সদস্য ফরম পূরণ করি। যাচাই বাছাই শেষে কয়েক মাস পর খবর এলো আজ থেকে আমিও ফোরামের একজন সদস্য। এ যেন বড় খুশির খবর। তখন থেকেই ফোরামের যাবতীয় কার্যক্রম খুব ফলো করি। যত দেখি ততই মুগ্ধ হই। বিশেষ করে নবীনদের উঠিয়ে আনার লক্ষ্যে ফোরাম যে বিশ্রামহীন কাজ; তা বড়ই প্রশংসনীয়। এতে ফোরামের সুনাম-সুখ্যাতি দিন দিন বেড়েই চলছে ।
স্বপ্ন মানুষের জীবনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। নিজের জীবনে কোনো স্বপ্ন নেই এমন মানুষ খুব কমই আছে। সবার মতো আমারও বেশ অনেক স্বপ্ন আছে। যে স্বপ্ন, আশা আর প্রত্যাশা নিয়ে ফোরামে এসেছিলাম সময় যাচ্ছে আর তা হাতে নাগালে আসছে। গত কয়েকমাস যাবৎ চলছে ফোরামের তত্ত্বাবধানে লেখালেখি কর্মশালা, সাহিত্য-সাংবাদিকতা কোর্স। কোর্সটির আয়োজন করছে দেশের জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ‘আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম’ ও ‘সৃজন একাডেমি’। ‘নিজেকে গড়াই হোক জীবনের প্রথম অঙ্গীকার’। এই শ্লোগানটিকে অনুপ্রেরণার মুলতন্ত্র বানিয়ে এতে প্রায় শতাধিক তরুণ লিখিয়ে বন্ধুরা বেশ আগ্রহের সঙ্গেই যুক্ত হয়। দেখা গেছে প্রতিটি ক্লাসেই তারা বেশ মনোযোগী ছিল।
কোর্স শেষে কর্তৃপক্ষ বাছাই করে দশজনকে বিশেষ পুরস্কারও প্রদান করেন। এভাবে দিন যাচ্ছে আর তরুণরা তৈরি হচ্ছে। প্রবীনদের তত্ত্বাবধানে তারাও বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে নিয়মিত কলাম লিখছেন। লেখা দেখে বড়রা প্রশংসা করছে। আরও এগিয়ে যেতে উৎসাহ দিচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ আমি নিজেও প্রথম ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী ছিলাম। কোর্সে অংশগ্রহণের সবচেয়ে বড় পাওয়া বড়দের সাক্ষাৎ। প্রত্যাশার চেয়ে বেশিই পেয়েছি। আশাকরি ফোরামের তত্ত্বাবধানে আগামীতে এরকম আরো সৃজনশীল কাজে অংশ নিতে পারবো। তাই লেখক ফোরামের একজন সদস্য হয়ে আমি বেশ আনন্দিত। ফোরামের সদস্য সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। নবীন সদস্যরা বেশ কাজও উপহার দিচ্ছেন । এমতাবস্থায় বড়দের উচিত ছোটদের উৎসাহ দেওয়া, মাঝেমধ্যে নিজেদের কাজে তাদেরকে সঙ্গে রাখা। তরুণদের মধ্যে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আরো ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়া চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই সংগঠনের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও চির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। লেখক ফোরাম গত এক বছরে লেখালেখির মান, প্রাসঙ্গিকতা ও ধারাবাহিকতা বিবেচনা করে নবীনদের মধ্যে বর্ষের সেরা লেখক চিহ্নিত করে তাদের সম্মাননা দেওয়া যেতে পারে। এতে আশা করা যায় নবীনদের বেড়ে ওঠা সহজসাধ্য হবে। আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন। আমিন।
লেখক: সদস্য, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম।
বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ ।
ই-মেইল: [email protected]