যুদ্ধের আগুন উঠল জ্বলে
উভয় বাহিনী মুখোমুখি হল। একে অপরের আরও কাছ থেকে কাছে চলে এলো। হিন্দা বিনতে উতবা মহিলাদের মাঝে তাদেরকে নিয়ে দাড়িয়ে গেলেন। পুরুষ সৈন্যদের পেছনে পেছনে প্রচন্ড রবে রণদুন্দুভি আর ভেরি বাজিয়ে তারা তাদেরকে যুদ্ধ উন্মাদনায় তাদেরকে পাগল বানিয়ে ফেলছিল। ঘনঘোর সমরে ঝাপিয়ে পড়ল উভয় বাহিনী। চরম উত্তেজনা আর খুনজোশীতে রণাঙ্গন উত্তাল হয়ে উঠল।
যুদ্ধের চাকা ঘুরতে লাগলো অবিরাম তালে। আবু দুজানা রা. যুদ্ধ করতে করতে শত্রু বাহিনীর কাতারে ঢুকে গিয়ে ছিল। কারণ তার হাতে ছিল প্রিয়নবীর তরবারি। প্রিয় হাবিবের কাছে তার এ তরবারির হক্ব আদায়ের প্রতিশ্রুতি ছিল। যাকেই তিনি সামনে পেতেন তাকেই কচুকাটা করে ছাড়তেন।
হামযা বিন আব্দুল মুত্তালিব ও মুসআব বিন উমাইর রা. এর শাহাদাত বরণ
সিংহ পুরুষ হযরত হামযা রা. সেদিন প্রচন্ড বীর বিক্রমে লড়াই করে যাচ্ছিলেন। মুশরিকদের কাতারের পর কাতার ওলট-পালট করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। জনমের মত ঠান্ডা করে দিয়েছিলেন তাদের কয়েকজন বাছা বাছা বীর বাহাদুরকে।
তাঁর সামনে সেদিন কোনো বাপের বেটা দাড়ানোর ক্ষমতা ছিলনা। কিন্তু কুদরতের লীলা বোঝা কোন্ মানবের সাধ্য আছে? জুবাইর ইবনে মুতঈমের গোলাম ওয়াহশি সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে এক জায়গায় চুপটি মেরে হামযা রা.এর জন্য হা করে ছিল। সে ছিল অভিজ্ঞ বর্শাখেলাড়ু। তার হাতের নিশানা ছিল অব্যর্থ। জুবাইর তাকে হামাযাকে হত্যার বিনিময়ে আযাদির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কারণ হামযা রা. ইতোপূর্বে বদর প্রান্তরে জুবাইরের চাচা তুয়াইমাকে হত্যা করেছিলেন। একইভাবে হিন্দা বিনতে উতবাও হামযা রা. কে হত্যার প্রতি চরম লালায়িত ছিল।
প্রচন্ড বীর বিক্রমে যুদ্ধ চালিয়ে ওয়াহশির তাক করা বর্শার সীমার ভিতরে চলে আসা মাত্রই সে তার প্রতি বর্শা ছুড়ে দিল। উল্কা হয়ে ছুটে যাওয়া সেই বর্শা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলোনা। হামযা রা. এর দেহভেদ করে দুই উরুর মাঝখান দিয়ে বেরিয়ে গেল। তিনি শহীদ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। মুসআব বিন উমাইর রা. রাসূলে আকরাম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সামনে দাড়িয়ে যুদ্ধ করে যাচ্ছিলেন।
দুশমনের একের পর এক আঘাতে একসময় নিস্তেজ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। মুসলমানরা এ যুদ্ধের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেমন দারুণ কঠোর পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিলেন। পরম দিলবারি আর সাহসিকতার প্রমাণ দিয়ে উত্তীর্ণও হয়েছিলেন তেমন সফলভাবে