(১) হিজরতের রাতে : ১৪শ নববী বর্ষের ২৭e সফর মোতাবেক ৬২২ খৃষ্টাব্দের ১২ই সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতের পর।
(২) পরদিন ১৩ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার ছওর পাহাড়ের গুহামুখে উপস্থিত শত্রুদের ব্যর্থ চেষ্টা। যারা ১০০ উট পাওয়ার লোভে তাঁর সন্ধানে বের হয়েছিল।
(৩) ৬২২ খৃষ্টাব্দের ১৮ই সেপ্টেম্বর বুধবার বনু মুদলিজ গোত্রের নেতা সুরাক্বা বিন মালেক বিন জু‘শুম কর্তৃক হিজরতের পথিমধ্যে হামলার ব্যর্থ প্রচেষ্টা।
(৪) পরদিন ১৯শে সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সাক্ষাত যমদূত হিসাবে দেখা দেয় বিখ্যাত আরব বীর বুরাইদা আসলামী ও তার ৭০ জনের একটি পুরস্কার লোভী দল। কিন্তু রাসূলের সঙ্গে কথা বলার পর বুরাইদা তার দলবলসহ ওখানেই মুসলমান হয়ে যায় ও রাসূলের দেহরক্ষী বনে যায়।
(৫) ২য় হিজরীর ১৭ই রামাযানে সংঘটিত বদর যুদ্ধের কয়েক দিন পরে মক্কার নেতা ছাফওয়ান বিন উমাইয়ার কুপরামর্শে দুষ্টমতি ওমায়ের বিন ওয়াহাব আল-জামহী তীব্র বিষ মিশ্রিত তরবারি নিয়ে মদীনা আগমন করে। কিন্তু রাসূল (ছাঃ) তাকে দেখেই কাছে ডেকে নিয়ে মক্কায় বসে ছাফওয়ান ও তাঁর মধ্যকার গোপন পরামর্শ এবং তার হত্যা পরিকল্পনার কথা ফাঁস করে দেন। এতে সে হতবাক হয়ে আত্মসমর্পণ করে ও মুসলমান হয়ে যায়। পরে মক্কায় ফিরে গিয়ে তার দাওয়াতে বহু লোক ইসলামে দাখিল হয়।
(৬) ৪র্থ হিজরীর রবীউল আউয়াল মোতাবেক ৬২৫ খৃষ্টাব্দের আগষ্ট মাসে পূর্বের সন্ধিচুক্তি অনুযায়ী রক্তমূল্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বনু নাযীরের ইহুদীদের কাছে এলে অর্থ প্রদানের ওয়াদা দিয়ে তাঁকে বসিয়ে রেখে দেওয়ালের উপর থেকে বড় পাথর ফেলে তারা তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু অহি-র মাধ্যমে জানতে পেরে রাসূল (ছাঃ) সেখান থেকে দ্রুত ফিরে আসেন।
(৭) ৬ষ্ঠ হিজরীর মুহাররম মাসে ইয়ামামাহর হানীফা গোত্রের নেতা ছুমামাহ বিন আছাল হানাফী ইয়ামামার নেতা মুসায়লামাহর নির্দেশে রাসূলকে হত্যা করার জন্য ছদ্মবেশে মদীনায় আসছিল। কিন্তু পথিমধ্যে সে মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহর সেনাদলের হাতে ধরা পড়ে যায়। মদীনায় আনার পর তিনদিন মসজিদে নববীতে তাকে বেঁধে রাখা হয়। তারপর তাকে মুক্তি দিলে সে মুসলমান হয়ে মক্কায় ওমরাহ করতে যায় এবং ইসলামের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(৮) ৬ষ্ঠ হিজরীর রামাযান মাসে বনু ফাযারাহ গোত্রের একটি শাখার নেত্রী উম্মে কুরফা রাসূলকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে এবং এজন্য ৩০ জন সশস্ত্র ব্যক্তিকে নিয়োগ করে। কিন্তু তারা আবুবকর অথবা যায়েদ বিন হারেছাহর সেনাদলের হাতে গ্রেফতার হয়ে নিহত হয়।
(৯) ৭ম হিজরীর মুহাররম মাসে খায়বর বিজয়ের পরে সেখানেই তাঁর পূর্বপরিচিত ইহুদী নেতা সালাম বিন মুশকিমের স্ত্রী যয়নব বিনতুল হারেছ রাসূলকে হাদিয়া দেওয়ার জন্য তাঁর প্রিয় খাদ্য বকরীর ভূনা রান বিষমিশ্রিত করে নিয়ে আসে। রাসূল (সাঃ) তা চিবানোর পর না খেয়ে ফেলে দেন। এভাবে আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে যান।
(১০) ৭ম হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে যাতুর রেক্বা যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে বিশ্রাম স্থলের একটি গাছে ঝুলানো রাসূলের তরবারি হাতে নিয়ে গাওরাছ ইবনুল হারেছ নামক জনৈক বেদুঈন রাসূলকে হুমকি দিয়ে বলে, এবার তোমাকে কে রক্ষা করবে? রাসূল (সাঃ) দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, আল্লাহ। তখন তরবারি খানা তার হাত থেকে পড়ে যায় এবং পরে সে মুসলমান হয়ে যায়।