Monday, December 2, 2024
No menu items!
Homeফাজায়েল ও মাসায়েলনারীদের জন্যপর্দা করা আল্লাহভীতির পরিচায়ক

পর্দা করা আল্লাহভীতির পরিচায়ক

পর্দার অপর নাম তাকওয়া বা আল্লাহর ভয়[3]।  আল্লাহ তা’আলা বলেন,

﴿يَٰبَنِيٓ ءَادَمَ قَدۡ أَنزَلۡنَا عَلَيۡكُمۡ لِبَاسٗا يُوَٰرِي سَوۡءَٰتِكُمۡ وَرِيشٗاۖ وَلِبَاسُ ٱلتَّقۡوَىٰ ذَٰلِكَ خَيۡرٞۚ  ﴾] سورة الأعراف [26 :

“হে বনী আদম, আমি তো তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জা-স্থান ঢাকবে এবং যা সৌন্দর্যস্বরূপ। আর তাকওয়ার পোশাক,তা উত্তম”।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুমিন নারীদেরকে সম্বোধন করে পর্দা করার নির্দেশ দেন এবং বলেন, 

]وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ [  ]سورة النــور31 : [

“হে রাসূল আপনি মুমিন নারীদের বলে দিন।” অনুরূপভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অপর এক আয়াতে আরও বলেন

, وَنِسَاء الْمُؤْمِنِينَ  (59) سورة الأحزاب  

“হে মুমিনদের স্ত্রীগণ!”।

হাদিসে একটি ঘটনা বর্ণিত। বনী তামিম গোত্রের নারীরা একবার পাতলা কাপড়-যে কাপড়ে শরীর দেখা যায়- পরিধান করে উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. এর ঘরে প্রবেশ করল, তাদের দেখে তিনি বললেন, 

« إن كنتن مؤمنات فليس هذا بلباس المؤمنات , وإن كنتن غير مؤمناتٍ , فتمتعن به »

“যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক, তবে তোমরা যে পোশাক পরিধান করেছ, তা কোন মুমিন নারীদের পোশাক হতে পারে না। আর যদি তোমরা মুমিন না হয়ে থাক তবে তা উপভোগ করতে থাক”। র্দাই ‘লজ্জা’

[পর্দা করা লজ্জার লক্ষণ, যাদের মধ্যে লজ্জা নাই, তাদের নিকট পর্দার কোন গুরুত্ব নাই।] রাসূল সা. বলেন,

« إن لكل دين خُلُقًا , وخُلُقُ الإسلام الحياء. »

“প্রতিটি দ্বীনের একটি চরিত্র আছে, আর ইসলামের চরিত্র হল, লজ্জা”। [হাদিসটি সহীহ]

রাসূল সা. আরও বলেন,

« الحياءُ من الإيمان , والإيمان في الجنة »

“লজ্জা ঈমানের অঙ্গ আর ঈমানের গন্তব্য হল জান্নাত”। [হাদিসটি সহীহ]

রাসূল সা. আরও বলেন,

« الحياء والإيمان قُرِنا جميعاً , فإذا رُفِعَ أحدُهما, رُفِعَ الآخرُ »  

“লজ্জা ও ঈমান উভয়টি একটি অপরটির সম্পূরক। যদি একটি শূন্য হয়, তখন অপরটিও শূন্য হয়ে যায়”। [হাদিসটি সহীহ]

উম্মুল মুমীনিন আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كنت أدخل البيت الذي دُفِنَ فيه رسول الله صلى الله عليه وسلم وأبي رضي الله عنه واضعةً ثوبي , وأقول: ( إنما هو زوجي وأبي ) , فلما دُفن عمر رضي الله عنه , والله ما دخلته إلا مشدودة عليَّ ثيابي , حياءً من عمر رضي الله عنه. »

“রাসূল সা.ও আমার পিতা আবুবকর রা. কে যে ঘরে দাফন করা হয়েছে, সে ঘরে আমি আমার কাপড় (ওড়না) খুলে প্রবেশ করতাম, আমি মনে মনে বলতাম, এরা আমার স্বামী ও পিতা। এখানে পর্দা করার কোন প্রয়োজন নাই। কিন্তু যখন ওমর রা. কে একই ঘরে দাফন করা হল, তখন ওমর রা. এর লজ্জায় আমি সে ঘরে কাপড়কে শক্ত করে পেঁচিয়ে ও কঠিন পর্দা করে প্রবেশ করতাম। [হাদিসটিকে হাকিম সহীহ বলেছেন]

এতে একটি কথা প্রমাণিত হয়, নারীদের জন্য পর্দা শুধু শরিয়তের বিধানের উপর নির্ভর নয়। বরং পর্দা হল, নারীদের স্বভাবের সাথে সম্পৃক্ত। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নারীদের সৃষ্টিই করেছেন, লজ্জাবতী ও কোমলমতী করে। ফলে তাদেরকে তাদের স্বভাবই লজ্জা করতে অনেক সময় বাধ্য করে।

পর্দা নারীদের জন্য আত্মমর্যাদা ও সম্মানের কারণ

আত্ম-মর্যাদা ও আত্ম-সম্মানের সাথে পর্দার সম্পর্ক নিবীড় ও গভীর। মানব জাতিকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আত্ম-সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। যার কারণে দেখা যায়, একজন মানুষ তার মেয়ে, বোন ও স্ত্রীদের প্রতি কোন লম্পট বা চরিত্রহীন লোকের কু-দৃষ্টিকে বরদাশত করতে পারে না। তাদের সম্মানহানি হয়, এমন কোন কাজ বা কর্মকে তারা কোন ক্রমেই মেনে নিতে পারে না। ইসলাম পূর্ব যুগে এবং ইসলামের যুগে অনেক যুদ্ধ বিদ্রোহ ও হানাহানি নারীদের ইজ্জত সম্মান রক্ষার কারণেই সংঘটিত হয়েছিল।  আলি ইবনে আবি তালেব রা. বলেন, 

« بلغني أن نسائكم يزاحمن العُلُوجَ – أي الرجال الكفار من العَجَم – في الأسواق , ألا تَغارون ؟ إنه لا خير فيمن لا يَغار »

“আমার নিকট সংবাদ পৌঁছেছে, তোমাদের নারীরা বাজারে পুরুষদের সাথে অবাধ মেলা-মেশা ও চলা-ফেরা করে। এতে কি তোমরা একটুও অপমান বোধ করো না, মনে রাখবে, যে ব্যক্তি এতে অপমানবোধ করে না, তার মধ্যে কোন কল্যাণ নাই”।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments