Monday, December 2, 2024
No menu items!
Homeসালামসালাম এর ক্ষেত্রে অনৈসলামিক সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ। পর্ব-৩

সালাম এর ক্ষেত্রে অনৈসলামিক সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ। পর্ব-৩

মৃত্যু শয্যায় সালাম

পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন-
كذالك يجزالله المتقين. الذين تتوفاهم الملائكة طيبين يقولون سلام عليكم ادخلوا الجنة بما كنتم تعلمون.
ঐ সকল লোক যাঁদের প্রাণ ফেরেস্তারা কবয করেন ঐ অবস্থায় যে, তারা (শিরক হতে) পবিত্র। তখন ফেরেস্তাগণ বলতে থাকেন- আসসালামু আলাইকুম (তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক) তোমরা বেহেশতে প্রবেশ কর, নিজেদের (সৎ) আমলের কারণে। [সূরা নাহলঃ আয়াত-৩২]

বেহেশতে সালাম

পবিত্র কোরআনে বেশ কিছু স্থানে বেহেশতের সালাম প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে।
এক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-
لا يسمعون فيها لغوا الاسلاما
সেখানে তারা (মুমিনরা) সালাম ব্যতিত আসার কোনো কথা-বার্তা শুনবে না। [সূরা মারয়ামঃ আয়াত-৬২]

অন্য একস্থানে ইরশাদ হয়েছে-
سلام قولامن رب رحيم
করুণাময় পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাদেরকে বলা হবে ‘সালাম’। [সূরা ইয়াসিনঃ আয়াত-৫৮]

এছাড়া সূরা ওয়াকিয়ায় ইরশাদ হয়েছে-
لا يسمعون فيها لغوا ولا تأثيما الاقيلا سلاما سلاما
তথায় তারা অবান্তর ও খারাপ কোন কথা শুনবে না, কিন্তু শুনবে শুধু সালাম আর সালাম।
[সূরা ওয়াকিয়াঃ আয়াত-২৫-২৬]

মোটকথা, একজন নেককার পরহেজগার মুসলমানের সৌভাগ্যে মৃত্যুর পূর্বক্ষণে ফেরেস্তাদের পক্ষ থেকে সালাম বর্ষিত হবে। আর যখন তারা বেহেশতে প্রবেশ করবে তখনও তাদের পরস্পর বাক্য বিনিময় হবে সালামের মাধ্যমে। তবে মুমিনদের জন্য জান্নাতে সবচেয়ে বড় সৌভাগ্যের বিষয় হবে স্বয়ং আল্লাহ্ তা’লা তাঁর বান্দাহ্দের সর্বপ্রথম সালামের মাধ্যমে সম্ভাষণ জানাবেন। তাফসীরকারকদের অভিমত হলো- জান্নাতে আল্লাহ তা’লার পক্ষ থেকে বান্দাহ্দের প্রতি সালাম বর্ষিত হওয়ার পর তারা এত উৎফুল্ল ও আনন্দ অনুভব করবে, যা কল্পনাতীত ব্যাপার। আল্লাহর এই সালামই বেহেশতবাসীদের জন্য হবে সবচেয়ে বড় আত্মতৃপ্তি ও গর্বের সম্ভল, সবচেয়ে বড় সম্মান ও অহংকারের বিষয়। কার ইচ্ছা না করে এত বড় সম্মানের অধিকারী হওয়ার?

ভালবাসা ও জান্নাত

রাসূলে কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
والذي نفسي بيده لا تدخلوا الجنة حتى تؤمنوا حتى تحابوا افلا ادلكم علي أمر إذا فعلتموه تحاببتم افشوا السلام بينكم-
ঐ সত্তার শপথ! যার হাতে আমার জীবন, তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবেনা; যতক্ষণ পর্যন্ত ঈমানের লেবাস গ্রহণ না করবে, আর তোমাদের ঈমানের লেবাসও পূর্ণ হবেনা, যতক্ষণ না তোমাদের পরস্পর সম্পর্ক রিদ্যতাপূর্ণ এবং ভালবাসায় ভরপুর হবে। অতঃপর রাসূল প্রশ্ন রাখেন- আমি কি তোমাদের সে কাজটি বাতলে দিবো, যার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পর সম্পর্ক হবে মধুর, রিদ্যতাপূর্ণ এবং ভালবাসায় থাকবে ভরপুর? রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই বলেন অন্তর খুলে “আসসালামু আলাইকুম” এর চর্চা চালু রাখ।
(আবু দাউদ শরীফ)

সালাম এমন এক মন্ত্র যার প্রচলন বেশী হলে, অধিক চর্চা চলতে থাকলে, প্রতিযোগিতামুলক মনখুলে একে অপরকে সালাম দেয়া অব্যহত রাখলে; পরস্পর রিদ্যতা, সহমর্মিতা গড়ে উঠবে, স্থাপিত হবে পরস্পর সুসম্পর্ক ও ভালবাসার রিদয় বন্ধন। আর এই গভীর ভালবাসা ও রিদ্যতাই জান্নাত প্রাপ্তির মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে ইনশাআল্লাহ।

উত্তম কাজ

সাহাবায়ে কেরামের পক্ষ হতে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল- ইসলামে কোন পদ্ধতি বা কোন কাজ সর্বোত্তম?
জবাবে হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
تطعم الطعام وتقرأالسلا علي من عرفت ومن لم تعرف.
অভাবীদের আহার করানো, এবং পরিচিত অপরিচিত প্রত্যেককে সালাম করা। (আবু দাউদ শরীফ)
অন্য এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল সাঃ ইরশাদ করেছেন,
إن أولي الناس بالله تعالى من بداهم بالسلام
আল্লাহ তা’লার কাছে উত্তম ঐ ব্যক্তি, যে সালামে প্রদানে অগ্রগামী।

{আমাদের এই লেখাটি পাকিস্তানের সিদ্দিকী ট্রাষ্ট কর্তৃক প্রকাশিত মাওলানা মনসুরুজ্জামান সিদ্দীকীর একটি উর্দু রেসালা]
বাংলা অনুবাদ করেছেন, দেশবরেণ্য আলেমে দ্বীন
মুফতি ফজলুল হক আমিনী(রহঃ)।
এই লেখাটি উৎসর্গ তার রুহের মাগফিরাত কামনায়।

আমাদের ফেসবুক পেজে এ যুক্ত হয়ে থাকতে পারেন এবং আমাদের কন্টেন্ট ভিডিও আকারে পেতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারেন।

সালাম এর ক্ষেত্রে অনৈসলামিক সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ। পর্ব-২

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments