Sunday, November 17, 2024
No menu items!
Homeসাহাবিদের জীবনীহযরত সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ) সকলেই জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ছিলেন।

হযরত সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ) সকলেই জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ছিলেন।

হযরত সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ) সকলেই জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ছিলেন।

গোটা মানবজাতির মাঝে মর্যাদার ক্ষেত্রে, আম্বিয়ায়ে কেরাম (আঃ) এর পর, হযরত সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ) রয়েছেন সবচেয়ে উঁচুস্থানে। হযরত সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ) যদিও নিষ্পাপ নন, আল্লাহ প্রদত্ত হেকমতে তাঁদের দ্বারা বিভিন্ন গুনাহ সংঘটিত হলেও, আল্লাহ তাআলা সেগুলো মাফ করে দিয়েছেন এবং তাদের জন্য স্বীয় সন্তুষ্টির পরোয়ানা ঘোষণা করেছেন। ইরশাদ করেন:-
رضى الله عنه ورضوا عنه
অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তাঁরাও আল্লাহ তায়ালার প্রতি সন্তুষ্ট।(সূরা মায়েদা, আয়াত নং ১১৯, সূরা তওবা, আয়াত নং ১০০, সূরা মুজাদালাহ, আয়াত নং ২২, সূরা বায়্যিনাহ, আয়াত নং ৮)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশ জন সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ)কে এক মজলিসে জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছিলেন। তাঁদেরকে বলা হয় আশারায়ে মুবাশশারা। হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:-
عن عبدالرحمن بن عوف عن النبي – صلى الله عليه وسلم – قال:أبو بكر في الجنة، وعمر في الجنة، وعثمان في الجنة، وعلي في الجنة، وطلحة في الجنة، والزبير في الجنة، وعبد الرحمن بن عوف في الجنة، وسعد بن أبي وقاص في الجنة، وسعيد بن زيد في الجنة، وأبو عبيدة بن الجراح في الجنة
অর্থাৎ ১. হযরত আবু বকর (রাদিঃ) ২. হযরত ওমর (রাদিঃ) ৩. হযরত উসমান (রাদিঃ) ৪. হযরত আলী (রাদিঃ) ৫. হযরত তালহা (রাদিঃ) ৬. হযরত জুবায়ের (রাদিঃ) ৭. হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাদিঃ) ৮. হযরত সায়ার ইবনে আবী ঝক্কাস (রাদিঃ) ৯. হযরত সাঈদ ইবনে যায়েদ (রাদিঃ) ১০. হযরত আবু উবাইদা ইবনে জাররাহ (রাদিঃ) সকলে জান্নাতবাসী।(আবু দাউদ শরীফ, হাদিস নং ৪৬৪৯, তিরমিজি শরীফ, হাদিস নং ৩৭৪৮, )
হযরত হাসান এবং হোসেন রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু সম্পর্কে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন:-
الحسن والحسين سيدا شباب أهل الجنة
অর্থাৎ হযরত হাসান ও হোসাইন রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু জান্নাতে যুবকদের সর্দার হবেন।
(তিরমিজি শরীফ হাদিস নং ৩৭৬৮,নাসায়ী শরীফ ৩/৩৯০,ইবনে হিব্বান হাদিস নং ২২২৮, মুসনাদে আহমদ ৩/১৬৬,)
বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ) সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীর ভাষায় ঘোষণা করেছেন:-
اعملوا ما شئتم قد غفرت لكم
অর্থাৎ তোমরা যা ইচ্ছে আমল করো, আমি আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি।(বুখারী শরীফ, হাদিস নং ৪৮৯০, মুসলিম শরীফ, হাদিস নং ২৪৯৪)
হুদায়বিয়ার সন্ধি কালে যারা বাইয়াত গ্রহণ করেছিলেন, আল্লাহ তাআলা তাঁদের সম্পর্কে ইরশাদ করেন:-
لقد رضى الله عن المؤمنين اذ يبايعونك تحت الشجرة
অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা মুমিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন, যখন তাঁরা গাছের নিচে আপনার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করল।(সূরা আল ফাতাহ, আয়াত নং ১৮)
হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:–
لا يَدْخُلُ النارَ أحدٌ ممَن بايعَ تحتَ الشجرةِ.
অর্থাৎ যারা গাছের নীচে (হুদায়বিয়ার সন্ধি কালে বাইয়াতে রিদওয়ানে)বাইআত গ্রহণ করেছিল, কেউ জাহান্নামে যাবে না।(আবু দাউদ শরীফ, হাদিস নং ৪৬৫৩, মুসলিম শরীফ, হাদিস নং ২৪৯৬)
এসকল আয়াত এবং হাদীস থেকে এ কথা সুস্পষ্ট বুঝে আসে যে, বদরযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবায়ে কেরাম, বাইয়াতে রিদওয়ানে অংশগ্রহণকারী সাহাবায়ে কেরাম, আশারায়ে মুবাশশারাহ এবং বিভিন্ন সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ) সকলে নিশ্চিতভাবে জান্নাতি।
তবে একটি সংসয় থেকে যায় যে, তাঁরা ব্যতীত অন্যান্য সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ) ও কি? জান্নাতের সুসংবাদ পেয়ে ছিলেন।
এ ব্যাপারে শাইখ আলী ইবনে খুযাইর (রহঃ) লিখেছেন:-
الصحيح أن الصحابة كلهم يشهد لهم بالجنة
অর্থাৎ বিশুদ্ধ কথা হল সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ) সকলেই দুনিয়াতে থাকা অবস্থায় জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ছিলেন।(আয্ জানাদ ফি শরহি লুমআতিল এ’তেক্বাদ পৃঃ ১১৯)
এ কথাটিকে তিনি কয়েকটি দলীলের মাধ্যমে প্রমাণিত করেছেন।
(১) وكلا وعد الله الحسنى اى الصحابة كلهم وعد الله الحسنى اى الجنة অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা সকল সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ) কে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।(সূরা হাদীদ আয়াত নং ১০)
(২) يوم لا يخزى الله النبى والذين آمنوا معه الاية وكل الصحابة امنوا معه অর্থাৎ সেদিন আল্লাহতালা নবী এবং তাঁর ঈমানদার সাথীদেরকে (সমস্ত সাহাবায়ে কেরাম রাদিঃ কে) অপদস্থ করবেন না।(সূরা আত তাহরীম আয়াত নং ৮)
ওলামায়ে কেরাম এই আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন:-
وفي هذه الآية دليل على المغفرة لجميع أصحاب النبيء – صلى الله عليه وسلم –
অর্থাৎ “আল্লাহ তাআলা সমস্ত সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ) কে মাফ করে দিয়েছেন”। এ আয়াতে এর সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
হাফেজ ইবনে হাযম (রাহঃ) লিখেছেন:-الصحابة كلهم من اهل الجنة قطعا অর্থাৎ সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ) সকলে নিশ্চিত ভাবে জান্নাতবাসি।( আদ্দুররাহ পৃঃ ৩৬৭,আল্ ইছাবাহ্ ফি মা’রিফাতিস্সাহাবাহ্ ১/১৯)
সকল সাহাবায়ে কেরাম (রাদিঃ) এর মধ্য থেকে হযরত মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু ও অন্যতম একজন সাহাবী, সুতরাং তিনি ও জান্নাতবাসী।

মুফতি মোজ্জাম্মেল হক রাহমানী
সিনিয়র উস্তাদ :- মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা, বসুন্ধরা, ঢাকা।

মুফতি নাজমুল হাসান সাকিব
মুফতি নাজমুল হাসান সাকিব
নাম: নাজমুল হাসান সাকিব পিতা: মুজিবুর রহমান স্থায়ী ঠিকানা: বাহেরবালী, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ। বর্তমান ঠিকানা: বসুন্ধরা, বারিধারা, ঢাকা ১২২৯ পড়াশোনাঃ- বাহেরবালী দারুল উলূম নূমানিয়া মাদরাসা, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ। (নূরানী টু হেদায়াতুন্নাহ্) জামিয়াতুস সালাম মদিনাবাগ, মুগদা, সবুজবাগ, ঢাকা। (কাফিয়া-শরহে বেকায়া) মারকাজুল উলূম আল-ইসলামিয়া মান্ডা, মুগদা, সবুজবাগ, ঢাকা। (আরবী স্নাতক ৪র্থ বর্ষ) মদিনাতুল উলূম বসুন্ধরা মাদরাসা ( হেদায়া) মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা। (এম এ- মাস্টার্স) আল মারকাজুল ইসলামী বাংলাদেশ। (ইসলামি আইন ও গবেষণা বিভাগ) পেশা: লেখালেখি ও পড়াশোনা। (ভবিষ্যত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এখনো অধ্যায়ণরত)।
RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments